1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদা কি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন?

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বিএনপির চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফার জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে৷ আর করোনাসহ নানা কারণে তার চিকিৎসাও হয়নি৷ তার পরিবারের সদস্যরা তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে চান৷

https://p.dw.com/p/3pNUe
খালেদা জিয়া
ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করে গত বছরের ২৫ মার্চ মুক্তি দেয়া হয়েছিল, পরে তা বাড়ানো হয়ছবি: bdnews24

তৃতীয় দফায় জামিন নিয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য নেয়াই এখন তার পরিবারের সদস্যদের ইচ্ছা বলে জানা গেছে৷ এজন্য তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে যোগাযোগ করছেন ৷

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, গত শুক্রবার খালেদা জিয়ার সাথে তার দেখা হয়েছে৷ এখনও তাকে অন্যের সহায়তা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়৷ তার হাঁটুর সমস্যা ছাড়াও হাতে ও কাঁধে ব্যথা বেড়েছে৷ আর অন্যান্য শারীরিক সমস্যা তো আছেই৷

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেয়া হয়েছে৷ এটাকে জামিন বলা যায় না৷ তিনি আসলে এখন গৃহবন্দি আছেন৷ কারণ তার বাইরে যাওয়ার অনুমতি নাই৷ আর বাইরের হাসপাতালেও তিনি চিকিৎসা নিতে পারছেন না৷ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা তাকে বাসায় এসে দেখে যান৷ বাসায় তো আর সব চিকিৎসা হয় না৷’’

তিনি জানান, সর্বশেষ বিএসএমইউ যে আ্যাডভান্স চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছে তা দেশে সম্ভব নয়৷ তিনি আগে  সৌদি আরব ও লন্ডনে চিকিৎসা করিয়েছেন৷ তাই তার পরিবারের সদস্যরা তাকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য নিতে চান৷ এ বিষয়ে আগেই যে আবেদন করা হয়েছিল তার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে৷

এটাকে জামিন বলা যায় না: ডা. জাহিদ হোসেন

তিনি বলেন, করোনার কারণে এত দিন তাকে দেশের বাইরে নেয়ার সুযোগ না থাকলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে৷ অনেকেই তো দেশের বাইরে যাচ্ছেন৷

করোনার মধ্যে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে গত বছরের ২৫ মার্চ মুক্তি দেয়া হয়৷ এর পর ২৪ সেপ্টেম্বর তা আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়, যা শেষ হবে আগামী ২৬ মার্চ৷

প্রথম দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার, বোন সেলিমা ইসলাম এবং বোনের স্বামী রফিকুল ইসলাম৷

শামীম ইস্কান্দার সোমবার জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতই আছে৷ তবে তিনি নতুন করে জামিনের আবেদন এবং দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য নেয়ার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি৷ সরকারে উচ্চ পর্যায়ে ফের আবেদন বা দেখা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এবিষয় নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না৷’’

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, তার জামিন এবং চিকিৎসার বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যরা দেখছেন৷ জামিনের বিষয়ে তার পরিবারে সদস্যদের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করেন৷ আইনজীবীদের একজন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার সর্বশেষ জামিনের ছয় মাস শেষ হওয়ার আগেই আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নেব৷’’

এব্যাপারেও কোনো লিখিত আবেদন পাইনি: আইনমন্ত্রী

আর ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘‘শারীরিক অসুস্থার কারণেই সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে চিকিৎসার জন্য৷ কিন্তু তার কোনো চিকিৎসা হয়নি৷ এখন করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তার চিকিৎসা কোথায় হবে সেব্যাপারে তার পরিবরাই সিদ্ধান্ত নেবে৷ জামিনের ব্যাপারে তাদের পরামর্শ অনুয়ায়ী আমরা কাজ করি৷ এখনও কোনো পরামর্শ পাইনি৷’’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য এখনও কোনো অবেদন তারা পাননি৷ আবেদন পেলে তখন দেখা হবে৷ আর লন্ডন বা অন্য কোনো দেশে চিকিৎসার জন্য আবেদনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘এব্যাপারেও কোনো লিখিত আবেদন পাইনি তাদের কাছ থেকে৷ পেলে তারপর আমরা দেখব৷’’

অবশ্য বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, এবার জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে খালেদা জিয়াকেচিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে চান তার পরিবারে সদস্যরা৷ বিএনপির শীর্ষ নেতারাও সেই চেষ্টাই করছেন৷ তবে সেটা করতে সরকারের সঙ্গে কী ধরনের সমঝোতা হতে পারে সে সম্পর্কে পরিস্কার কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি৷

গতবছরের ২৫ মার্চের ছবিঘরটি দেখুন...