খালি পায়ে দৌড়ানো ভালো
১ ফেব্রুয়ারি ২০১০গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, জুতো পায়ে যারা দৌড়ান তাদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই পায়ের গোড়ালির উপর চাপ ফেলেন৷ গবেষকদের মতে, প্রতি মাইল দৌড়ে প্রায় এক হাজার বার গোড়ালির উপর চাপ পড়ে৷ এমনকি যেসব জুতোতে নরম গদি জাতীয় জিনিস দিয়ে পায়ের আরামের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেগুলো পড়ে দৌড়ালেও এ সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবেনা বলে বলছেন গবেষকরা৷ তাদের মতে, প্রতি বছর ৩০ থেকে ৭৫ শতাংশ দৌড়বিদ যারা জুতো পায়ে দৌড়ান তারা চাপজনিত সমস্যায় ভোগেন৷ অন্যদিকে খালি পায়ে যারা দৌড়ান, তাদের মধ্যে জরিপ করে দেখা গেছে যে, তাদের অধিকাংশেরই গোড়ালির উপর চাপ পড়ে না৷ চাপ পড়ে পায়ের চারিদিকে বা পায়ের পাতার উপর৷ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেনিয়েল লিবারম্যানের নেতৃত্বে গবেষণাটি চালানো হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কেনিয়ার মানুষের উপর৷ উল্লেখ্য, পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর মানুষেরা সাধারনত খালি পায়ে দৌড়ে থাকেন৷ এছাড়া দূরপাল্লার দৌড়ের জন্য সেসব দেশের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে৷ যেমন, ১৯৬০ সালের অলিম্পিকে ইথিওপিয়ার দৌড়বিদ আবেবে বিকিলা ম্যারাথনে খালি পায়ে দৌড়ে রেকর্ড সময়ে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন৷
গবেষণা চালানো হয় তিনধরণের মানুষের উপর৷ এদের একদল হলো খালি পায়ের লোক, আরেকদল জুতো পড়ে দৌড়ানো লোক আর সর্বশেষ হলো সেই সব মানুষ, যারা আগে জুতো পরতেন কিন্তু এখন জুতো ছেড়ে খালি পায়েই দৌড় শুরু করেছেন৷ গবেষণার প্রাপ্ত উপাত্তে বলা হয়েছে যে, অনেকে মনে করে, খালি পায়ে দৌড়ানো বিপদজনক এবং এতে ব্যথা পাবার সম্ভাবনা থাকে৷ কিন্তু আসলে তা সত্য নয়৷ বরং সত্য হলো যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তাহলে খালি পায়ে কোনো রকম ব্যথা ছাড়াই বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন ও শক্ত রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায়৷
তাই বলে বর্তমানে যারা জুতো পড়ে দৌড়চ্ছেন তারা যদি হুট করে খালি পায়ে দৌড় শুরুর চিন্তা করেন তাহলে তা ঠিক হবেনা বলে গবেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন৷ তারা ধীরে ধীরে অভ্যাস পরিবর্তন করে তারপর খালি পায়ে দৌড় শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, খালি পায়ে দৌড়ানোর সুফল নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ফোরামে এবং ম্যাগাজিনগুলোতে বিভিন্ন সময় আলোচনা হয়েছে৷ এছাড়া জুতো প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো ভবিষ্যৎ বাজারের কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যে পাতলা চামড়ার মতো জুতো তৈরি শুরু করে দিয়েছে৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক, সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন