খারসনে ইউক্রেনের পাল্টা লড়াই
৩০ আগস্ট ২০২২২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেই প্রথম খারসন অঞ্চলটি দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। বস্তুত, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্ত দিয়েই রাশিয়ার সেনা ইউক্রেনে ঢুকেছিল। তাদের প্রথম লক্ষ্যই ছিল খারসন দখল করা। এতদিন খারসন রাশিয়ার সেনার দখলে ছিল. এবার ফের সেই অঞ্চল পুনর্দখলের লড়াই শুরু করেছে ইউক্রেন।
ইউক্রেন সেনার দক্ষিণাঞ্চলের কম্যান্ড জানিয়েছে, পুনর্দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। তবে এরচেয়ে বেশি আর কোনো তথ্য স্বাভাবিকভাবেই সেনা জানায়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গত কিছুদিন ধরেই খারসন পুনর্দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে খারসনের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম একটি সেতু। সপ্তাহখানেক আগে সেই সেতুটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে ইউক্রেন। এর ফলে খারসনে যে রাশিয়ার সেনা আছে, তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাশিয়ার পক্ষে খারসনে গোলা-বারুদ, অস্ত্র, খাবার, নতুন সেনা পাঠানো এখন প্রায় অসম্ভব। এই সুযোগে খারসনের পুনর্দখল নিতে চাইছে ইউক্রেন।
শুধু খারসন নয়, দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল এখন রাশিয়ার দখলে। সেই সমস্ত জায়গাই ফেরত পাওয়ার লড়াই শুরু করেছে ইউক্রেন। গত কয়েকসপ্তাহ ধরে সে কারণেই তারা লাগাতার রাশিয়ার অস্ত্রাগার, যুদ্ধাস্ত্র লক্ষ্য করে লড়াই চালিয়েছে। একের পর এক মিসাইল হামলা হয়েছে। ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার সেনাঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
ঝাপোরিজ্ঝিয়ায় আইএইএ
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রে তাদের একটি দল পাঠাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই দলটি ঝাপোরিজ্ঝিয়া পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রসি।
ঝাপোরিজ্ঝিয়া ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। আপাতত কেন্দ্রটি রাশিয়ার সেনা দখল করে রেখেছে। ইউক্রেনের অভিযোগ, ওই প্রকল্পের ভিতর থেকে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রটিতে একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে। কয়েকটি চুল্লি বন্ধও করে দিতে হয়েছে। তবে পরমাণু চুল্লিগুলি অক্ষত আছে।
রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেন ওই চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ইউক্রেন অবশ্য তা মানতে চায়নি। বরং পাল্টা দোষ রাশিয়ার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, আইএইএ বার বার পরমাণুকেন্দ্রটিকে অক্ষত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। সেখান থেকে সেনা সরানোর আবেদন করা হয়েছে। পরমাণু চুল্লিটি পরিদর্শনের আবেদন করা হয়েছে বার বার। অবশেষে তা সম্ভব হচ্ছে।
সোমবার গ্রসি জানিয়েছেন, যেভাবেই হোক ওই পরমাণু কেন্দ্রটিকে সুরক্ষিত করতে হবে। তার জন্য যা যা করা দরকার, তারা করবেন। আরো একটি দল প্রকল্পটিতে যেতে পারেন বলে জানা গেছে। তারাও প্রকল্পটির সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে।
শলৎসের বক্তব্য
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে ইউরোপের দেশগুলি কী মনোভাব দেখাতে পারে, কীভাবে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো যেতে পারে, তার একটি রূপরেখা তৈরির কথা বলেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস। প্রাগের বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা করার সময় তিনি বলেছেন, রাশিয়া আক্রমণ চালিয়ে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। লড়াই করে রাশিয়া তার সীমান্ত বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইউরোপ যা সচেতনভাবে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। ফলে রাশিয়ার এই কাজ ইউরোপের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপের স্বার্থেই সকলকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে ইউক্রেনকে আরো অস্ত্র দেওয়া হবে এদিন জানিয়েছেন চ্যান্সেলর।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)