‘কয়লা নগরী’তে জলবায়ু সম্মেলন শুরু
৩ ডিসেম্বর ২০১৮‘কনফারেন্স অফ দ্য পার্টিস’ বা কপ নামে পরিচিত জাতিসংঘের এই বার্ষিক আয়োজনের ২৪তম আয়োজন এটি৷ প্রায় দুই সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন ১৪ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা৷ বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশের প্রায় ২৩ হাজার অংশগ্রহণকারী এবার কপ২৪-এ উপস্থিত থাকবেন৷
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের এবার সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারছেন না৷
কপ২৪-এর সভাপতি পোল্যান্ডের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি মিখাল কুরতিকা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন৷ পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেই দুদা, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসসহ বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷
গুতেরেস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন থেকে বিশ্ব এখনও ‘অনেক দূরে’ আছে৷ সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখনও যথেষ্ট কাজ করছি না, পর্যাপ্ত গতিতে এগোচ্ছি না৷’’
মূল লক্ষ্য
২০১৫ সালে প্যারিসের জলবায়ু সম্মেলনে স্বাক্ষরিত চুক্তির বাস্তবায়ন ২০২০ সাল থেকে শুরু হওয়ার কথা৷ সেটি কার্যকর করতে একটি ‘রুলবুক’ বা নীতিমালা তৈরিই কপ২৪-এর মূল লক্ষ্য হিসেবে ধরা হয়েছে৷ প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বের তাপমাত্রা শিল্পবিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ে যা ছিল, তার চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়তে দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷
তবে গত অক্টোবরে জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ বা আইপিসিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ সেখানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ওপর জোর দেয়া হয়েছে৷ এই লক্ষ্য পূরণ করতে চাইলে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে বলে জানায় বিশ্বের প্রায় ৯০০ বিজ্ঞানীর যৌথভাবে লিখিত আইপিসিসির ঐ প্রতিবেদন৷
কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, চার বছর ধরে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন বৃদ্ধি থেমে থাকলেও আবার তা বাড়তে শুরু করেছে৷
‘জলবায়ু প্রথম, রাজনীতি দ্বিতীয়’
কাটোভিৎসে সম্মেলন শুরুর আগে রবিবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলস এবং জার্মানির বার্লিন ও কোলন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে৷ ব্রাসেলসের বিক্ষোভে প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ অংশ নেন বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
কার্বন নির্গমন কমাতে আরো উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে কাটোভিৎসে অংশ নেয়া রাজনীতিবিদ ও নীতি-নির্ধারকদের আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা৷
তাঁদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা বিভিন্ন স্লোগানের মধ্যে আছে ‘প্ল্যানেট বি বলে কিছু নেই’, ‘জলবায়ু প্রথম, রাজনীতি দ্বিতীয়’ ইত্যাদি৷
ইয়েন্স থুরাউ/জেডএইচ