ধর্ষণ
৪ জানুয়ারি ২০১৩ঘটনাটি গত মাসের৷ গত ৭ই ডিসেম্বর বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে এক স্কুলছাত্রীকে পাশের পাহাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে যায় মেয়েটির এক বান্ধবী৷ সেখানে তাকে আটকে রাখা হয় তিন দিন৷ টানা তিনদিন ধর্ষণ করা হয় তাকে৷
মেয়েটির কথিত বান্ধবীসহ পাঁচজনকে অবশ্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে ইতিমধ্যে৷ এমনকি বুধবার তাদের রিমান্ডেও পাঠিয়েছে আদালত৷ এছাড়া, ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে৷ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে বেশ কিছু সংগঠন৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেয়া হবে৷
ধর্ষণের শিকার মেয়েটির ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা চলছে৷ চিকিৎসা তদারকের জন্য সাত সদস্যের একটি মেডিকেল কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ খবরের কাগজে, অনলাইন সংবাদে কিংবা টেলিভিশন, রেডিওতে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া অমানবিক ঘটনাটির খবর আসছে এভাবেই৷ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার হওয়া ছাড়া নতুন কিছু আছে এ খবরে? গ্রেপ্তার না হয় হলোই, বিচার তাড়াতাড়ি শেষ করে সত্যিই কি শাস্তি দেয়া হবে দোষীদের? বিচার কতটা হয় ধর্ষনের মামলার? বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল জানালেন বড় জোর শতকরা ১০ ভাগ ধর্ষণের ঘটনার বিচার হয়ে থাকে৷
তথ্যটা নিঃসন্দেহে হতাশাজনক৷ সুলতানা কামালও তাঁর হতাশা লুকোননি৷ বরং এক্ষেত্রে নিজেরা যে তেমন কিছু করতে পারেননি, তা-ও স্বীকার করেছেন তিনি অকপটে৷ ধর্ষণের শিকার যে মেয়ে এবং তার পরিবারের লোকলজ্জার ভয় কিংবা দোষীদের হুমকির কারণে আইনের আশ্রয় না নেয়া, আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে হাসপাতাল থেকে আদালত পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে যেসব বাধা – সে সবকেই বিচার না হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি৷ এমন অবস্থায় অনেক ঘটনাই অন্ধকারে থেকে যায়, অনেক নারীর কান্নাই থেকে যায় অশ্রুত৷ জানাজানি হলেও শুরু হয় রাজনীতির নোংরা এক খেলা৷ ক্ষমতাসীন দল চায় দায় এড়াতে৷ বিরোধী দলের ভূমিকাও যে খুব দায়িত্বশীল এবং মানবিক হয়, তা বলার মতো দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে৷
এবারের পরিস্থিতি কি একইরকম? সুলতানা কামাল এ বিষয়ে তাঁর নিজস্ব অভিমত তুলে ধরেছেন৷ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার হওয়া প্রসঙ্গে তাঁর কথা, ‘‘অভিযুক্তদের সঙ্গে যদি ক্ষমতাসীন দলের কোনো সম্পর্ক থাকতো তাহলে কী হতো বলা মুশকিল৷'’
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ