সংস্কৃতি বিনোদন
২ সেপ্টেম্বর ২০১২ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক আলবের্তো বার্বেরা বলেছেন, মহিলা চিত্রপরিচালকদের জন্য কোনো কোটা ছিল না৷ এক শতকের বেশি ধরে সিনেমা প্রধানত একটি পুরুষ-অধ্যুষিত পরিবেশ ছিল৷ এখন সিনেমাও উপলব্ধি করেছে যে, মহিলাদের একটি নিজস্ব সৃজনীশক্তি আছে৷
ভেনিসে এবার গোল্ডেন লায়ন পুরস্কারের জন্য যে ১৮টি ছবি প্রতিযোগিতায় নামছে, তাদের মধ্যে চারটির পরিচালক মহিলা৷ নায়ার অবশ্য মহিলা পরিচালক প্রসঙ্গে ভেনিসে আয়োজিত একটি সম্মেলনে বলেছেন যে, তিনি চিরকালই মহিলাদের সম্ভাবনায় বিশ্বাস করে এসেছেন এবং নিজে মহিলা হওয়াটাকে কোনোদিনই তাঁর শিল্পকলার পথে প্রতিবন্ধক বলে মনে করেননি৷ এছাড়া মহিলারা এমন কিছু বাস্তবের সন্ধান জানেন, পুরুষরা যা থেকে বঞ্চিত, বলে নায়ার মন্তব্য করেন৷
জোই কাসাভেটিস'এর মতো মার্কিন মহিলা চিত্রপরিচালকরা আবার ঐ তকমাটাকে কিছুটা একপেশে, একঘরে করা বলে মনে করেন৷ ইটালির গিয়াদা কোলাগ্রান্দে আবার মনে করেন, ইটালিতে ওটা সত্যিই একটা সমস্যা, কেননা এখানে মনোবৃত্তি মান্ধাতার আমলের এবং চিত্রপরিচালকদের মাত্র পাঁচ কি ছয় শতাংশ মহিলা৷
‘‘ওয়াজদা''
ইউরোপ-অ্যামেরিকাতেই যদি এই দশা হয়, তাহলে সৌদি আরবে যে কী পরিস্থিতি হবে, তা সহজেই আন্দাজ করা যেতে পারে৷ এই প্রথম ভেনিসে একটি সৌদি কাহিনিচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে৷ এবং তার পরিচালক এক মহিলা৷
হাইফা আল মনসুরএর ‘‘ওয়াজদা'' এক আশ্চর্য কাহিনি৷ এক সৌদি কিশোরী, এক টিনেজারের সাইকেল কেনার স্বপ্নকে ঘিরে বোনা ছবিটিতে রক্ষণশীল সৌদি সমাজে নারী স্বাধীনতার সীমানাগুলোকে পরখ করে দেখা হচ্ছে৷ তিনি ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনাটাকেই দেখাতে চেয়েছিলেন, বলেছেন আল মনসুর৷
মনসুরের ছবির সৌদি কিশোরী যেমন পশ্চিমি গান এবং ফ্যাশনের ভক্ত হওয়ার ফলে বিপদে পড়ে, ছবি তৈরি করতে গিয়ে আল মনসুরকেও কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি৷ কিছু এলাকায় ভ্যানে বসে ওয়াকি-টকি হাতে চিত্রপরিচালনা করতে হয়েছে, কেননা মহিলা হিসেবে তিনি প্রকাশ্যে পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন না৷
সৌদি আরবে ফিল্ম বলে কিছু নেই, প্রকাশ্যে ফিল্ম প্রদর্শন নিষিদ্ধ৷ মনসুরকে প্রযোজক যোগাড় করতে জার্মানি অবধি যেতে হয়েছে৷ তবে যে সব সৌদি সংস্থা ছবিটিতে অর্থ প্রদান করেছে, তাদের মধ্যে সৌদি রাজ পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত রোতানা স্টুডিওস'ও আছে৷ এখানেই আগামীতে পরিবর্তনের অগ্রদূত দেখছেন হাইফা আল মনসুর৷
এসি / এএইচ (এএফপি, এপি)