‘কোন দেশে বাস করি...'
৮ আগস্ট ২০১৪আমার ব্লগে জুবায়ের শিশির লিখেছেন,
‘‘লঞ্চ ডুবল চার দিন আগে৷ অথট এখনো লঞ্চ এর দেখাই মিলে নাই৷ আর ডুবে যাওয়া মানুষদের উদ্ধার তো দূরের কথা৷ ৩০ জনকে মৃতদেহ পাওয়া গেছে৷ ১৩১ জন এখনো নিখোঁজ৷ এ কোন দেশে বাস করছি আমরা! ৮৫ জন যাত্রীর জন্য জায়গা ছিল পিনাক-৬ এ৷ আমাদের দেশের এই ব্যবস্থাটাও নেই, অর্থাৎ অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া হচ্ছে এটা দেখার মতো পরিদর্শক নেই৷''
তিনি আক্ষেপ করে লিখেছেন, ‘‘দেশের মানুষ এত অসচেতন কেন? সরকারকে আর কি দোষ দিব! আমাদের দেশ প্রযুক্তির দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে আছে – চ্যানেলগুলোর খবরে এই কথাই শোনা যাচ্ছে৷ আর পদ্মা সেতু সরকারের নাতি-নাত্নিরাও করে যেতে পারবে না৷''
গার্মেন্টসে বিক্ষোভ নিয়ে জুবায়ের শিশির লিখেছেন, ‘‘গার্মেন্টস শিল্পটা ছিল৷ বেতনের জন্য তাও নীচে নেমে যাচ্ছে৷ আজকেও তোবা গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বিক্ষোভ হচ্ছে৷ কোথায় যাবো!''
হাসান রাজিবুল সামহয়্যারইন ব্লগে লিখেছেন, ‘‘তোবায় শ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে বিভক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন, অসহায় হয়ে পড়ছে সাধারণ শ্রমিকরা৷ তুবা গার্মেন্টসের বেতন ভাতাকে নিয়ে তৈরি পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংগঠনগুলির মাঝে তৈরি হয়েছে তীব্র মতপার্থক্য, তারা একে-অপরকে দোষারোপ করে যাচ্ছে এই পরিস্থিতির জন্য৷ প্রশ্ন হলো, গার্মেন্টস খাতে রয়েছে অসংখ্য শ্রমিক সংগঠন, এরা কখোনোই কি শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে পেরেছিল? শ্রমিকের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বিভক্ত কিংবা একত্রিত হয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলো এই পর্যন্ত যে কাজটি সুন্দর ভাবে করতে পেরেছে তা হচ্ছে, মালিক পক্ষের সার্থটি অতি যত্ন সহকারে রক্ষা করা৷''
একই ব্লগে আব্দুল হালিম মিয়া লঞ্চডুবির ঘটনাটি নিয়ে লিখেছেন৷ তিনি লিখেছেন,
‘‘নৌমন্ত্রী শাজাহান খানকে গতকালকের একটা লেখায় পদত্যাগ করতে বলেছিলাম৷ জানি সেটা হবে না৷ পৃথিবীর বহু দেশের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীদের অনেক তুচ্ছ কারণে পদ ছেড়ে দেয়ার উদাহরণ দিয়েছি৷ তবে বাংলাদেশে সেটা হয় না, কারণ এখানে ব্যাক্তিকে বড় করে দেখা হয়৷ বিগত ছয় বছরে দেশের নৌ-খাতে সামান্যতম সত্যিকারের কোনে উন্নয়ন তিনি করতে না পারলেও, খুব মনযোগ দিয়ে জড়িত থাকেন পরিবহন শ্রমিকদের সাথে আর কিছুদিন যাবত গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথে৷ এটা তিনি কেন করেন সেটা দেশবাসী ভালো করেই জানেন৷''
হালিম মিয়ার কথায়, ‘‘আজ আমি উনাকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই, যেটা হয়ত তিনি জানেন অথবা জানেন না৷ ক্যানাডাতে আমরা কোনো লিফট বা এলিভেটরে যখন উঠি আর সেটাতে যদি অতিরিক্ত মানুষ চড়ে বসেন – কী হয়? লিফটটা চলা বন্ধ করে কো কো করে আওয়াজ শুরু করে দেয়৷ কারণ ওই এলিভেটরের মানুষ বহন করার একটা নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে৷ সে ক্ষমতার বেশি হয়ে গেলে সে আওয়াজ করে, কারণ সেটা ভেঙে পড়তে পারে৷ যতক্ষণ না কিছু মানুষ নেমে যান, ওটা চলা শুরু করে না৷ এছাড়া বেশ কিছু ‘ডিভাইস' বের হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে দূর থেকেও আপনি সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন৷ যেমন ধরুন, আপনি আপনার দোকানে ঠিকমতো যেতে পারেন না, বাসায় বসেই দেখতে চান যে আপনার দোকানে কী হচ্ছে, কাকে কী বলতে হবে৷ সেখানে দূর নিয়ন্ত্রিত ক্যামেরাটা বসিয়ে দিন৷ আপনি সহজেই দেখতে পাবেন ঘরে বসেই যে দোকানে কে কি করছে৷''
তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘কয়েকটা মাত্র উদাহরণ দিলাম৷ এখন মাননীয় মন্ত্রী শাজাহান খানকে অনুরোধ করবো যে অন্য কিছু না পারলেও, মানুষগুলোকে বাঁচাতে চেষ্টা করুন৷ প্রত্যকেটা লঞ্চে, বাসে এই ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করুন, করতে বাধ্য করুন অন্যদের৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা : দেবারতি গুহ