কোলাকুলিতেই সমস্যার সমাধান
১০ অক্টোবর ২০১৩ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার অমৃতাপুরীতে একটা আন্দোৎসব হয়ে গেল কয়েক দিন আগে৷ সেখানেই ‘মাতা অমৃতানন্দময়ী' প্রধান আশ্রম৷ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে, তাঁদের প্রিয় ‘আম্মা'-র সঙ্গে কোলাকুলি করে জীবনে কাঙ্খিত পরিবর্তন আনতে সেখানে সমবেত হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ৷ এ পর্যন্ত ৩ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষের সঙ্গে কোলাকুলি করেছেন ‘মাতা অমৃতানন্দময়ী'৷ তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে সেদিনও এসেছিল অসংখ্য ভক্ত৷ মা শুধু হাসিমুখে কোলাকুলি করেছেন৷ তাতেই সবাই খুশি, হতাশা কাটিয়ে সফল জীবনের স্বাদ পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী৷
প্রচলিত কোনো ধর্মের অনুসারী নন ‘মাতা অমৃতানন্দময়ী'৷ সব সময় ঠোঁটে লেগে থাকে প্রাণখোলা হাসি, যা সবাইকেই কাছে টানে৷ অভ্যাগতরা তাঁকে নিজের জীবনের দুঃখ-কষ্ট, অপ্রাপ্তির বেদনার কথা বলেন, মা হাসিমুখে আলিঙ্গন করেন, তাতেই হয়ে যায় সব সমস্যার সমাধান৷ কারো কারো কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু কার্যকারীতা না থাকলে, অধিকাংশের উপকার না হলে বিশ্বের নানা দেশে ‘মাতা অমৃতানন্দময়ী'-র নামে অসংখ্য হাসপাতাল, স্কুল, দরিদ্র এবং নারীদের জন্য আশ্রয় শিবির, অনাথাশ্রম বা অন্যান্য দাতব্য প্রতিষ্ঠান হতো?
বিভিন্ন দেশে এ পর্যন্ত ৩৫টি কল্যাণ কেন্দ্র হয়েছে মাতা অমৃতানন্দময়ীর নামে৷ ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম, নোবেল বিজয়ী লেল্যান্ড এইচ হার্টওয়েল, কৃষিবিদ এম এস স্বামীনাথনের মতো বিশিষ্টজনও আছেন একই ছাউনিতলে৷ যুক্তরাষ্ট্রের অস্কারজয়ী চিত্র পরিচালক জ্যান কাউনেন মাতা অমৃতানন্দময়ীকে নিয়ে একটা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন, ছবির নাম, ‘দর্শন: দ্য এমব্রেস'৷ কান চলচ্চিত্র উৎসবেও দেখানো হয়েছিল ছবিটি৷ মাতা অমৃতানন্দময়ী এবং তাঁর কোলাকুলি করে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার কথা জানাতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক নাগরিক দান্তে সয়্যার বলেন, ‘‘উনি শুধু জীবন্ত কিংবদন্তী নন, পবিত্র অবতারের মতো৷ আজকের এই আধুনিক পৃথিবীতে ‘আম্মা' লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে যাচ্ছেন, স্রেফ ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে সব বদলে দিচ্ছেন – এর গুরুত্ব কি অস্বীকার করা যায়?''
গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডজয়ী মিকো ফন হার্টজেন জানালেন, মাতা অমৃতানন্দময়ীর কোলাকুলির শক্তি রহস্য, ‘‘কোলাকুলিটা শুধু শারীরিক ব্যাপার নয়, এর ফলে তাঁর ভেতর থেকে এমন একটা কিছু বেরিয়ে আসে যা আমাদের মনে স্নেহের বীজ বুনে দেয়৷''