কেন্দ্রীয় ব্যাংকই ভরসা!
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার যখন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রশ্নে ঐকমত্যে আসতে পারছে না, তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে আবার হাল ধরেছে ইসিবি৷ গত সপ্তাহে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার আরও কমিয়েছে, বাজারে আরও অর্থ ঢালতে এক কর্মসূচি ঘোষণা করছে এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের আর্থিক সম্পদ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ উদ্দেশ্য, ব্যাংকগুলি যাতে আরও সহজে ঋণ দিতে শুরু করে৷ অনেক বিশেষজ্ঞই ভাবতে পারেননি, ইসিবি এত দ্রুত এতগুলি সিদ্ধান্ত নেবে৷
কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, ইসিবি-র সক্রিয় ভূমিকা বার বার ইউরো এলাকার বিপদ কাটিয়ে তুলছে বটে, কিন্তু এর ফলে জাতীয় সরকারগুলি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেবার ক্ষেত্রে ঢিলেমি দেখাচ্ছে৷ গত সপ্তাহের সিদ্ধান্তের ফলেও ফ্রান্সের মতো দেশের উপর থেকে চাপ অনেকটা কমে গেল৷ ইসিবি প্রধান দ্রাগি বলছেন, তিনি নিয়মের কাঠামোর মধ্যে থেকেই যথাসাধ্য করছেন৷ তাছাড়া তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে শুধু আর্থিক নীতি ইউরো এলাকার সংকট কাটানোর জন্য যথেষ্ট নয়৷ এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে রাজনৈতিক স্তরে ঐকমত্যের কোনো বিকল্প নেই৷
আপাতত দুশ্চিন্তা ফ্রান্স ও ইটালিকে নিয়ে৷ ফ্রান্স যথেষ্ট বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে পারছে না৷ ইটালির সরকার উদ্যোগ শুরু করলেও তার ফল দেখা যাচ্ছে না৷ তবে অন্যান্য দেশগুলি পরিস্থিতি সামলে উঠছে৷ আয়ারল্যান্ড সময়ের আগেই আইএমএফ-কে ঋণ ফেরত দিতে চায়৷ ফলে সে দেশকে কম সময়ের জন্য চড়া সুদের হার গুনতে হবে৷ পর্তুগাল আবার প্রবৃদ্ধির পথে ফিরে এসেছে৷ স্পেনের সরকার কড়া হাতে অর্থনীতিকে মজবুত করে তুলছে৷ তবে চরম বেকারত্ব দূর করতে এখনো সাফল্য আসেনি৷ গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অদূর ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধির আশা প্রকাশ করেছেন৷
এদিকে স্কটল্যান্ডের মানুষ আসন্ন গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিতে পারেন – এমন আশঙ্কায় ব্রিটেনের পুঁজিবাজার বেশ ধাক্কা খেয়েছে৷ পাউন্ডের বিনিময় মূল্যও কমে গেছে৷ স্কটল্যান্ড সত্যি স্বাধীনতার পথে গেলে সে দেশের মুদ্রা কী হবে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি কাটছে না৷ স্কটল্যান্ডের দুর্বলতা ইউরোপের অর্থনীতির উপরেও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷
এই অবস্থায় চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইউরোপের পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ তবে জুলাই মাসে জার্মানির রপ্তানি আবার বেড়ে যাওয়ায় বাজার আশ্বস্ত হয়েছে৷ ২,২২০ কোটি ইউরো ট্রেড সারপ্লাসের ফলে জার্মানির রপ্তানি রেকর্ড মাত্রা ছুঁয়েছে৷ এর আগে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ০.২ শতাংশ কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছিল৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)