কেন্দ্র দখলের অভিযোগ
১৫ মে ২০১৮খুলনার ইকবাল নগর কেন্দ্রের বাইরে বিএনপির ক্যাম্পে ভাঙচুর করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সিল মারার ঘটনায় খুলনা মহানগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২০২ নম্বর ভোটকেন্দ্র ইকবাল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভোট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে৷ দুপুর ১২টার দিকে রিটার্নিং অফিসার ইউনুস আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন৷ এছাড়া কেন্দ্রের বাইরে বিএনপির ক্যাম্পে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷
এর আগে সকাল ৮ টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়৷ সকালে রহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটদান শেষে বিএনপি প্রার্থী মঞ্জু অভিযোগ করেন, ‘‘আমার এজেন্টদের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার খবর পেয়েছি৷ এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ খবর পেয়েছি ২২, ২৫, ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কোনো কেন্দ্রেই বিএনপির এজেন্ট নেই৷ তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে৷ ৩০টি সেন্টারের খবর পেয়েছি যেখান থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে৷’’
তবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক দাবি করেন,‘‘শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হচ্ছে৷ কোথাও কোনো অনিয়মের অভিযোগ পাইনি৷’’
ইকবাল নগর কেন্দ্রের সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বেলা ১১টার দিকে স্কুলের অ্যাকাডেমিক ভবন-২ সাত নম্বর বুথে ১৫-২০ জনের একটি দল দোতলায় উঠে আসে৷ তাঁর কাছ থেকে ব্যালটের বই ছিনিয়ে নিয়ে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়৷ এরপর তিনি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে বিষয়টি জানান৷ তিনি ঘটনাস্থল পরির্দশনের পর তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল করে দেন৷
নির্বাচনের খবর সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত সাংবাদিক হেদায়েত হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে বিএনপি'র এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ সিল মারা ও ব্যালট পেপার কেড়ে নেয়ার অভিযোগও আছে৷ কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার শেষ৷’’
বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন কোনো অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না৷ এটা কোনো ভোট নয়৷ প্রকাশ্যে সিল মারা হচ্ছে, আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে৷ এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনোভাবেই আগামীতে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়৷ আমি ভোট কাটা, কেন্দ্র দখলের সাক্ষী হয়ে থাকলাম আরকি৷’’
খুলনা সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক আর বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম ছাড়াও আরো তিনজন মেয়র প্রার্থী আছেন৷ মোট ওয়ার্ড ৩১টি৷ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৮ জন৷ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১০টি পদে প্রার্থী ৩৫ জন৷ এই সিটিতে মোট ভোটার চার লাখ ৯৩ হাজার৷
খুলনায় ২৮৯টি ভোট কোন্দ্রের মধ্যে ২৪৫টি ভোট কেন্দ্রকেই ঝুকিপূর্ণ ধরা হয়েছে৷ ১৬ প্লাটুন বিজিবিসহ চার হাজারের মতো ফোর্স নিয়োজিত আছে৷ আছে ম্যাজিস্ট্রেট৷
নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন ঢাকায় জানান, ‘‘বিএনপির অভিযোগ সুনির্দিষ্ট নয়৷ যা হয়েছে, তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা৷ একটি কেন্দ্রের নির্বাচন সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বাতিল করা হয়েছে৷ এছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবেই হচ্ছে৷’’
বিকেল চারটায় ভোটগ্রহণ শেষ হবে৷
আপনি কি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন? তাহলে আমাদের জানান সেখানকার পরিস্থিতি, লিখুন নীচের ঘরে৷