1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কীভাবে কাবুল বিমানবন্দর চালাবে তালেবান?

১ সেপ্টেম্বর ২০২১

মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী কাবুল ছেড়েছে। বিমানবন্দর তালেবানের হাতে। কিন্তু কীভাবে চলবে এই বিমানবন্দর?

https://p.dw.com/p/3zkjV
মার্কিন সেনাদের নিয়ে চলে যাচ্ছে অ্যামেরিকার বিমান। বিমানবন্দর এখন তালেবানের হাতে। ছবি: Wali Sabawoon/AP Photo/picture alliance

কাবুল বিমানবন্দর থেকে শেষ মার্কিন সেনা চলে যাওয়ার পরেই উল্লাসে ফেটে পড়ে তালেবান। তালেবান কর্মীরা বিমানবন্দরের দখল নিয়ে নিয়েছে। তারা শূন্যে গুলি চালিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছে। তালেবান জানিয়েছে, তারাই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

বিমানবন্দর চালু রাখতে গেলে দুইটি বিষয় চাই। প্রথমত, প্রযুক্তির দিকটা দেখতে পারবেন এবং বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারবেন এমন প্রশিক্ষিত কর্মীদল। দুই, বিমানবন্দরের ভিতরে ও বাইরে সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন, এমন প্রশিক্ষিত কর্মীরা। তালেবানের কাছে এর কোনোটাই এই মুহূর্তে নেই। তারা বিমানবন্দরের দখল নিয়ে সেখানে নিরাপত্তা দেবে বলছে, কিন্তু তারা এই কাজে প্রশিক্ষিত নয়। তাই প্রশ্ন উঠছে, তালেবান কি এই সুরক্ষা দিতে পারবে?

বিমানবন্দর চালু রাখার মতো প্রযুক্তির জ্ঞান ও ব্যবহার জানা দক্ষ প্রশিক্ষিত মানুষও তালেবানের কাছে নেই। তারা তাই তুরস্ককে বিমানবন্দর চলানোর কাজটা করতে বলেছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান এই প্রস্তাব বিবেচনা করছেন।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ, তালেবানের শুরু

এতদিন এই বিমানবন্দর চালাত মার্কিন ও ন্যাটো বহিনী। তারা বিমানবন্দরের সুরক্ষা দিত। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষিত কর্মীরা বিমান চলাচলের দিকটা দেখতেন। তালেবান নিষেধ করা সত্ত্বেও প্রশিক্ষিত আফগান কর্মীরা অধিকাংশই দেশ ছেড়েছেন। তাই কাবুল বিমানবন্দর কীভাবে চলবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

নিরপত্তার দায়িত্বে কে?

তালেবান মুখপাত্র সংবাদসংস্থা আল জাজিরাকে বলেছেন, তালেবানই বিমানবন্দরের সুরক্ষার দায়িত্ব নেবে। তারাই বিমানবন্দরের ভিতর ও বাইরের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। সংবাদসংস্থা এএফপি-কে তালেবান মুখপাত্র বিলাল করিমি বলেছেন, ''আমাদের যোদ্ধা ও বিশেষ বাহিনী বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে। তার জন্য অন্য কারো সাহায্যের দরকার হবে না।''

কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ এবং ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টার থিঙ্কট্যাঙ্কের সদস্য কুগেলম্যান বলেছেন, যদি এয়ারলাইন্সগুলিকে ফিরে আসতে হয়, তা হলে বিদেশি নিরাপত্তা কর্মীদের সেখানে থাকা জরুরি। কারণ, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে এয়ারলাইন্সের শঙ্কা থাকাটা স্বাভাবিক। বাণিজ্যিক ও যাত্রীবাহী বিমান চলাচলকারী সংস্থা নিরাপত্তার বিষয়টি দেখেই বিমান চালাবে।

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, তারা চান, তালেবান বিদেশি সহায়তা গ্রহণ করুক। তারা তালেবানকে বোঝাবার চেষ্টা করছে যে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার অনেকগুলি দিক আছে। সেখানে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা রক্ষী দরকার।

বিমানবন্দর কে চালাবে?

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, তারা আফগান জনগণকে বিমানবন্দর ফিরিয়ে দিয়েছেন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ন্যাটোর প্রশিক্ষিত কর্মীরা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, জ্বালানির বিষয়টি এবং যোগাযোগের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন।

তালেবান এখন তুরস্ককে এই দায়িত্ব সামলাতে অনুরোধ করেছে। কিন্তু এর্দোয়ান এখনো পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তিনি বলেছেন, তালেবান নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজ হাতে তুলে নিয়েছে। কিন্তু তারা কীভাবে নিশ্চিত করবে যে, বিমানবন্দরে আবার আক্রমণ হবে না, রক্তাক্ত হবে না বিমানবন্দর?

প্রশিক্ষিত কর্মী ছাড়া বিমানবন্দর চালানো সম্ভব নয়। কিন্তু তালেবানের ভয়ে প্রশিক্ষিত আফগানরা কাবুল ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, এত প্রশিক্ষিত কর্মী কোথা থেকে পাবে তালেবান?

কোন বিমানসংস্থা আসবে?

তালেবান জানিয়েছে, অসামরিক আফগানদের বিদেশে যাওয়া ও দেশে ফেরার জন্য তারা বিমান চলাচল জারি রাখতে চায়। কিন্তু বাণিজ্যিক বিমানের কি হবে? নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না হলে তারা কাবুল বিমানবন্দরে আসবে না।

তালেবান যদি বিমানবন্দর চালু রাখতে পারে, তা হলে তাদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।

অ্যামেরিকা জানিয়েছে, তাদের সেনা চলে আসার পর কাবুল বিমানবন্দরে এখন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থা কাজ করছে না। আগাম অনুমতি ছাড়া কোনো মার্কিন অসামরিক বিমান কাবুলে যেতে পারবে না।

বিমানবন্দরের অবস্থা

কাবুল বিমানবন্দরের অবস্থা একেবারেই ভালো নয়। তলেবান কাবুল দখল করার পর হাজার হাজার আফগান বিমানবন্দরে চলে আসে। বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তারা বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর করেছে। এর ফলে জরুরি পরিকাঠামো নষ্ট হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের অবস্থা শোচনীয়। জরুরি পরিকাঠামো নষ্ট হয়েছে। তবে আশার কথা, রানওয়ে এখনো ঠিক আছে।

জিএইচ/এসজি (এএফপি, রয়টার্স, আল জাজিরা)