নাইজেরিয়ার অপহৃত ছাত্রীরা
১৮ এপ্রিল ২০১৪নাইজেরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার রাতে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের রাজ্য বোর্নো-র চিবোক এলাকা থেকে ১২৯ জন ছাত্রীকে অপহরণ করেছিল বন্দুকধারীরা৷ রাজধানী আবুজায় বোকো হারামের বোমা হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেই এই গণ অপহরণের ঘটনাটি ঘটে৷ ঐ হামলায় মারা যায় ৭৫ জন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা সদস্য সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন যে, এখনও অন্তত ১০০ জন জঙ্গিদের হাতে বন্দি রয়েছে৷
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য জানিয়েছে, ছাত্রীরা সবাই নিরাপদে আছে৷ তবে মেয়েদের না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাদের বাবা-মা৷ এমনই একজন বাবা লাওয়ান জান্না বলেছেন, ‘‘সেনাবাহিনী মেয়েদের খুঁজে পেয়ে উদ্ধার করেছে এর সত্যতা ততক্ষণ স্বীকার করব না, যতক্ষণ তাদের নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি৷ তিনিসহ অন্য অভিভাবকদের অভিযোগ, সেনাবাহিনী তাদের মিথ্যা সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছে৷ জান্না প্রশ্ন করেন ‘‘তারা বলছে, আমাদের মেয়েরা মুক্তি পেয়েছে, কিন্তু কোথায় তারা?''
সোমবার রাতে অপহরণের আগে ঐ সরকারি গার্লস স্কুলের ভবনে আগুন লাগিয়ে গেটে পাহারা দেয়া নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বন্দুকধারীরা৷ সেখানেই দুই নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়৷ পালিয়ে আসা তিন ছাত্রী জানিয়েছে তাদের বোর্নো-র সাম্বিসা জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ ঐ এলাকাটি বোকা হারামের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত৷ বোর্নো-র গভর্নর কাশিম সেট্টিমা বুধবার জানিয়েছিলেন, মাত্র ১৪ জন মেয়ে জঙ্গিদের হাত থেকে পালাতে পেরেছে৷
সেনাবাহিনীর তথ্য অস্বীকার বৃহস্পতিবার টেলিফোনে সংবাদ সংস্থা এপিকে স্কুলটির অধ্যক্ষ আসাবে কোয়ামবুরা বলেছেন যে, সব ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখনো অপেক্ষা করছি এবং প্রার্থনা করছি যাতে তারা নিরাপদে ফিরে আসে৷ নিরাপত্তাকর্মীরা এখনো তাদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে৷ জঙ্গল তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখছে তারা৷''
তিনি এও জানান, ‘‘মঙ্গলবার ভোরে ১৪ জন ছাত্রী পালিয়ে এসেছে৷ কারণ তারা ট্রাক থেকে লাফিয়ে পড়েছিল৷''
বোকো হারাম বরাবরই পশ্চিমা শিক্ষার বিরুদ্ধে এবং এ কারণে ২০০৯ সাল থেকে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি৷ তবে এতগুলো মেয়েকে অপহরণের ঘটনা এই প্রথম৷ এ বছরেই এ পর্যন্ত বোকো হারামের হাতে নিহত হয়েছে ১,৫০০ মানুষ৷ অথচ ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তাদের হামলায় নিহত হয়েছিল কমপক্ষে ৩,৬০০ জন৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি)