কাশ্মীরে শান্তিপূর্ণ ভোট, বুথে লম্বা লাইন
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ভোটগ্রহণপর্ব শুরু হয় সকাল সাতটা থেকে। ডিডাব্লিউর প্রতিনিধি এবি রউফ গিয়ানি জানিয়েছেন, ''সকাল থেকে বুথের সামনে লম্বা লাইন ছিল। প্রচুর মানুষ ভোট দিতে এসেছেন। বেলা বারোটার পর বুথে ভোটদাতাদের সংখ্যা কমে যায়। তিনটের পর আবার বাড়বে। কারণ, কাশ্মীরে সচরাচর বেলা বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত কম ভোট পড়ে।''
এমনিতে ভোট এখনো পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ। কোথাও কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। গত কয়েকদিন ধরে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে ভোটের দিন শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রচুর নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। পুরো কাশ্মীর জুড়েই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তা পি কে পোল জানিয়েছেন, একেবারে শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। তাদের আশা, দিনের শেষে ভোটের হার ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।
যুবকরা ভোট দিচ্ছেন
রউফ জানিয়েছেন, ''এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ভোটকেন্দ্রে যুবদের উপস্থিতি। আগে দেখা যেত, বয়স্করাই বেশি করে ভোট দিতে আসছেন। তরুণ প্রজন্মের মানুষের উৎসাহ কম। এবার সেই ছবিটা বদলে গেছে। এবার তরুণরা অনেক বেশি করে ভোটকেন্দ্রে এসেছেন। তাদের জন্য বিশেষ বুথও বানানো হয়েছিল।''
যুবদের বিপুল সংখ্যায় ভোটের প্রভাব কি ফলাফলের উপর পড়বে? রউফের বক্তব্য, ''বয়স্করা সাধারণত ন্যাশনাল কনফারেন্সের সমর্থক। কিন্তু যুবদের ভোট যে কোনো দিকে যেতে পারে। তবে যতজনের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা সকলেই বলেছেন, আমরা নিজেদের প্রতিনিধি চাই। আমরা এলজি-র কাছে পৌঁছাতে পারি না। ফলে আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় মানুষকে চাই।''
ডিডাব্লিউ উর্দুর সাংবাদিক সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, ''যুবরা তো ছিলেনই, সেই সঙ্গে প্রচুর নারীও ভোটকেন্দ্রের লাইনে ছিলেন। বিশেষ করে বয়স্কা নারীরা প্রচুর সংখ্যায় ভোট দিয়েছেন।''
তিনি জানিয়েছেন, ''আমি বেশ কয়েকজন যুব ভোটদাতার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, নিজেদের প্রতিনিধিকে তারা বিধানসভায় দেখতে চান। যারা তাদের সমস্যার কথা শুনবেন। সেগুলি সমাধানের চেষ্টা করবেন।''
কাী বলছে রাজনৈতিক দলগুলি?
ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা বলেছেন, ''প্রচুর নির্দল ভোটে দাঁড়িয়েছেন। কাশ্মীরে অনেক বেশি নির্দলীয় প্রার্থী আছেন। এটা মানুষের ভোট ভাগ করার চেষ্টা। এটা ভোটদাতাদের মাথায় রাখা উচিত।''
ওমরের আশা, ''মানুষ ন্যাশনাল কনফারেন্স-কংগ্রেস জোটকেই জিতিয়ে আনবে।'' তিনি বলেছেন, ''আমাদের এই জোটে সিপিএমও আছে। আমরা আমাদের কথা ভোটদাতার কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এবার তারা কী রায় দেন সেটাই দেখার।''
তিনি বলেছেন, ''এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত ১০ বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে। জম্মু ও কাশ্মীরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। লাদাখকে আলাদা করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়েছে, এর ফলে কার লাভ হয়েছে কে জানে!''
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ''আমরা আপনাদের অধিকার ফিরিয়ে দেব। জম্মু ও কাশ্মীরকে আগের মর্যাদা দেব। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার একটি রাজ্যকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে। এটা জম্মু ও কাশ্মীরের অপমান।''
বিজেপি নেতা জাবেদ আহমেদ কাদরি বলেছেন, ''জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি ভালো করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বড় ভূমিকা নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকার এখানকার উন্নয়নের দিকে নজর দিয়েছে। মানুষ তাই বিপুল সংখ্যায় এসে ভোট দিচ্ছেন।'' বিজেপি নেত্রী ও কিস্তওয়ারে বিজেপি প্রার্থী শাগুন পারিহার বলেছেন, ''জম্মু ও কাশ্মীরে বিজেপি বিপুল ভোটে জিতে সরকার গঠন করবে।''
জিএইচ/এসিবি(পিটিআই, এএনআই)