কাপুর হাভেলি নিয়ে বিতর্ক পেশোয়ারে
৩০ জুলাই ২০২০সাধারণ বাড়ি নয়, হাভেলি। ঘরে ঘরে সিনেমার আলোচনা। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের আগে পর্যন্ত পেশোয়ারের এই বাড়ি পরিচিত ছিল 'কাপুর বাড়ি' হিসেবে। দেশভাগ বদলে দিয়েছে অনেক কিছুই। কাপুর পরিবারও চলে এসেছে মুম্বইয়ে। কিন্তু থেকে গিয়েছে সেই পুরনো হাভেলি। এক সময় রাজ কপূর-ঋষি কপুরদের পূর্বপুরুষরা যে বাড়ি তৈরি করেছিলেন। কার্যত পোড়ো বাড়িতে পরিণত হওয়া সেই হাভেলি নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।
রাজ কাপুররা বাড়ি ছেড়ে চলে আসার পরে হাজি মহম্মদ ইসরার সেই বাড়ির মালিক হন। পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী ইসরার অবশ্য ওই বাড়িতে থাকেননি কখনও। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, এলাকায় এখন ওই হাভেলি 'ভূতের বাড়ি' নামে পরিচিত। পেশোয়ারে একের পর এক ভূমিকম্প, বৃষ্টি এবং হাওয়ার দাপটে কার্যত ভাঙতে বসেছে ওই বাড়িটি। এত দিন সে ভাবে দেখভালও কেউ করেননি। ২০১৮ সালে ঋষি কাপর পাকিস্তান সরকারের কাছে একটি আবেদন করেন। সদ্য প্রয়াত অভিনেতা অনুরোধ করেছিলেন, ওই বাড়িটিকে যাতে জাদুঘরে পরিণত করা হয়। বাড়িটির রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্ব যেন সরকার নেয়।
২০১৮ সালেই পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি ঋষি কপূরকে আশ্বাস দেন পেশোয়ারের বিখ্যাত বাজার কিস্সা খাওনির অদূরে অবস্থিত তাঁদের বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের সমস্ত দায়িত্ব নেবে পাকিস্তান সরকার। বাড়িটিকে জাদুঘরে পরিণত করা হবে।
কিন্তু বেঁকে বসেছেন বাড়ির বর্তমান মালিক ইসরার। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন বাড়ির মালিক তিনি এবং সরকারের কাছে বাড়িটি বিক্রি করতে চান না। বরং ওই বাড়িটি ভেঙে সেখানে একটি বড় বাণিজ্যিক বহুতল করতে চান তিনি। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে ইসরারের। সরকার জানিয়েছে, কোনও ভাবেই বাড়িটি ভাঙতে পারবেন না ইসরার। কারণ বাড়িটিকে হেরিটেজ বিল্ডিং হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এবং ইসরার যাতে বাড়ি ভাঙতে না পারেন, তার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এফাইআরও করে রাখা হয়েছে। পাক সরকার ইসরারকে জানিয়েছে, তারা বাড়িটি কিনে নিতে চায়। কিন্তু ইসরার বক্তব্য, যে দাম তাঁকে দেওয়া হচ্ছে, তা তাঁর পছন্দ হচ্ছে না।
স্থাপত্য বিশেষজ্ঞদের অনেকরই আশঙ্কা এ ভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে এমনিই ভেঙে পড়বে বাড়িটি। ইসরাও তারই অপেক্ষায় আছেন বলে অনেকের ধারণা।
পৃথ্বীরাজ কাপুরের বাবা বশেশ্বরনাথ কাপুর তৈরি করেছিলেন এই হাভেলি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঋষি কাপুর '৯০ এর দশকে রণধীর কপূরকে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই বাড়িতে। এলাকার লোকেদের সঙ্গে প্রচুর আডডাও মেরেছিলেন তাঁরা। পেশোয়ারের হেরিটেজ কমিটির অন্যতম সদস্য শাকিল ওয়াহিদুল্লা জানিয়েছেন, বাড়িটির অবস্থা খুবই খারাপ। সরকার চেষ্টা করছে দ্রুত বাড়িটি নিজেদের হাতে নিয়ে সংস্কার কাজ কাজ শুরু করছে। তাঁর আশা বিতর্ক কাটিয়ে দ্রুত একটি সমাধান সূত্রে পৌঁছনো যাবে।
এসজি/জিএইচ (এইচটি)