কানে কম শুনলে পরে পাগল হওয়ার আশঙ্কা
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১১যারা কানে একটু কম শুনতে পান, বয়সের সাথে সাথে তাদের মধ্যে ডিমেনশিয়া তথা স্মৃতিভ্রংশতা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে৷ জানালেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক লিন এবং তাঁর দল৷ তবে তাই বলে শ্রবণশক্তি খাটো হলেই কি সবাই পাগল হয়ে যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে বেশ স্পষ্টভাবেই লিন জানান, না, তা নয়৷ বরং শ্রবণশক্তি যতোটা হ্রাস পাবে মানসিক বিভ্রাটের ঝুঁকি ততোটাই বেশি৷ ৩৬ থেকে ৯০ বছর পর্যন্ত বয়সের ছয় শতাধিক মানুষের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন তাঁরা৷ প্রায় ১২ বছর ধরে এসব ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ও পরিবর্তনের উপর নজরদারি করেছেন বিজ্ঞানীরা৷
গবেষণার শুরুতে তাদের সবার শ্রবণ মান পরীক্ষা করা হয়৷ অথচ তখন কারোই ডিমেনশিয়া ছিল না৷ কিন্তু পর্যবেক্ষণের সময় ধরেই তাদের শতকরা নয় জনের মাঝে ডিমেনশিয়া বাড়তে থাকে৷ শ্রবণশক্তির ঘাটতি অল্প হলে একজন সাধারণ মানুষের চেয়ে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ৷ মাঝারি ধরণের শ্রবণ ঘাটতির জন্য ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি তিনগুণ৷ আর বেশি মাত্রায় শ্রবণ ঘাটতির ক্ষেত্রে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি পাঁচ গুণ বলে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন৷ ‘আর্কাইভস অফ নিউরোলজি' নামের সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞানীদের গবেষণার এই ফল৷
শ্রবণমানের সাথে ডিমেনশিয়ার এমন সম্পর্কের কারণ এখনও স্পষ্ট না হলেও লিন মনে করছেন, তিন ধরণের সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে৷ একটি হচ্ছে, হয়তো শ্রবণশক্তি হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার জন্য একই ধরণের ঘটনা দায়ী৷ অথবা কম শ্রবণশক্তি বিশিষ্ট মানুষ মানসিক বিকৃতি ঠেকাতে অপারগ হয়ে পড়েন৷ তৃতীয় ধারণাটি হচ্ছে, শ্রবণশক্তি হ্রাসের কারণে সমাজ থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্নতা এবং একাকিত্ব থেকেও ডিমেনশিয়ার সৃষ্টি হতে পারে৷
তাই এখন বিজ্ঞানীরা স্মৃতিভ্রংশ তথা ডিমেনশিয়া থেকে বাঁচাতে শ্রবণশক্তির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন৷ এক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল পেলে হয়তো মানুষ আর ততো বেশি মানসিক বিকৃতি, স্মৃতিভ্রম কিংবা স্মৃতির বিভ্রাটের শিকার হবে না এমনটিই আশা লিন এবং তাঁর সহযোগী গবেষকদের৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন