ফরাসি উৎসব
১৩ মে ২০১২অস্কারের পর কান চলচ্চিত্র উৎসবকেই সবচেয়ে বড় বলে ধরা হয়৷ সেই ১৯৩৯ সাল থেকে ফ্রান্সে বসছে এই চলচ্চিত্র উৎসব৷ ইটালির ভেনিসের মোস্ত্রা উৎসবকে টেক্কা দিতেই তখনকার চলচ্চিত্র বোদ্ধারা এই উৎসবের চালু করেন৷ তৎকালীন নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জবাব হিসেবেই কান এর যাত্রা শুরু হয় তখন৷ ১৯৩৯ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর বসে প্রথম কান-এর আসর৷ তবে মাত্র দু'দিন স্থায়ী সেই আসরে একটি মাত্র ছবি প্রদর্শিত হয়, সেটি ছিলো ভিক্টর হুগোর কালজয়ী উপন্যাসের আলোকে নির্মিত হলিউডের ছবি ‘হ্যাঞ্চব্যাক অব নতরদাম'৷ নাৎসি হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ করলে কান এর প্রথম আসরটি অসমাপ্ত থেকেই শেষ হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে ফ্রান্সের এই চলচ্চিত্র উৎসব৷ ১৯৪৬ সালে ২১টি দেশের অংশ গ্রহণে কান উৎসব নতুন করে পথচলা শুরু করে৷ দেখতে দেখতে এরপর ৬৫ বছর পার হয়ে গেছে৷ সেই কারণে এবারের কান তাই একটা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে৷
সেই পুরনো দিনের কথা মনে করতে গিয়ে কান উৎসবের ৮১ বছর বয়সী চেয়ারম্যান গিল জ্যাকব বলেন, ‘‘তখন কোন সংবাদ মাধ্যমকে দেখাই যেত না, আমরা নিজেরা সবাই সবাইকে চিনতাম৷ এটা ছিলো ছোট্ট একটা কলোনির মতই৷ সিনেমার তারকারা সমুদ্রের পাড়ে আর সব সাধারণ মানুষদের মাঝে মিশে যেতেন৷ টিভি আসার পর সব কিছুই বদলে গেছে,'' মন্তব্য গিল জ্যাকবের৷
সেই কান এখন বিশাল পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ এবারের উৎসবের মূল প্রতিযোগিতায় দেখানো হবে ৯০টি ছবি৷ চার হাজারের বেশি ছবি এখন এই চলচ্চিত্র উৎসবকে ঘিরে সিনেমার বাজারে ঘোরাঘুরি করছে৷ একসময় যেই কান উৎসবে সাংবাদিকের দেখাই মিলতো না, আজ সেখানে মিডিয়া কর্মীদের সংখ্যাই সাড়ে চার হাজারের বেশি৷ হলিউডের সব নামী দামী তারকারা কানের লাল গালিচার শোভা বর্ধন করছেন৷ এবারও নিকোল কিডম্যান, ব্র্যাড পিটের মত তারকাদের দেখা মিলবে কান উৎসবে৷ মাত্র একটি ছবি দেখিয়ে যে কান উৎসবের শুরু হয়েছিলো, যুগের পরিক্রমায় আজ সেটি এক বিশাল যজ্ঞে পরিণত হয়েছে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম (এএফপি)
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়