1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাদের নির্যাতনে রমেল চাকমার মৃত্যু হয়েছে?

২২ এপ্রিল ২০১৭

রমেল চাকমা সেনা সদস্যদের নির্যাতনে মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ৷ সেনাবাহিনীর তাঁকে আটকের কথা স্বীকার করলেও নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ আর পুলিশ বলছে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে সেনা সদস্যরা৷

https://p.dw.com/p/2bjCN
Bangladesch Parlamentswahlen
ছবি: DW/M. Mamun

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা শাখার পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সাধারণ সম্পাদক ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমা মারা যান ১৯ এপ্রিল দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে৷ এর আগে পাঁচ এপ্রিল রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা বাজার থেকে তাঁকে আটক করে সেনা সদস্যরা৷

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘সেনা সদস্যদের নির্যাতনেই রমেল চাকমা মারা গেছে৷'' তিনি এর সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার দাবি করেন৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘রমেল যদি অপরাধী হয়ে থাকে আইনের মাধ্যমে তার বিচার হোক৷ কিন্তু তা করা হয়নি৷ তাকে মেরে ফেলা হয়েছে৷''

Latif.mp3 - MP3-Stereo

এর জবাবে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল রাশেদুল হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গত পাঁচ এপ্রিল তাকে ট্রাক পোড়ান এবং বাস লুটের মামলায় সেনা সদস্যরা আটক করেন এবং ওই দিনই (পাঁচ এপ্রিল) তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়৷ এরপর পুলিশের তত্ত্বাবধানে তিনি পরবর্তী ১৪ দিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন৷ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ এপ্রিল তিনি মারা যান৷ সেনাবাহিনীর নির্যাতনে তিনি মারা গেছেন বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়, সত্য নয়৷''

১৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাপাতালে মারা যাওয়ার পর ২১ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে নানিয়ারচরের বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্বহাতিমারা গ্রামে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রমেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে পুলিশের তত্ত্বাবধানে৷

নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমোদ খীসা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘১৯ এপ্রিল পুলিশ হেফাজতে লাশটি বুড়িঘাটে রাত ৮টায় পৌঁছায়৷ তখন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল৷ পরে লাশটি বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার বাবুলের দোকানে রাখা হয়৷ পরে শুক্রবার সকালে লাশটি রমেলের গ্রামের বাড়ি পূর্বহাতিমারা নিয়ে দুপুরে দাহ করা হয়৷ সেখানে তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিল৷''

এদিকে, নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা রমেলকে আটক করিনি এবং হাসপাতালেও ভর্তি করিনি৷ আমরা পাঁচলাইশ থানা পুলিশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে গিয়ে লাশের সুরতহাল ও ময়না তদন্তের পর লাশটি গ্রহণ করি৷ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সিএমপির পাঁচলাইশ থানা এলাকায়৷ কিন্তু রমেল চাকমার বাড়ি নানিয়ারচরে হওয়ায় লাশ আমাদের নানিয়ারচরে নিয়ে আসতে হয়েছে৷''

Chakma.mp3 - MP3-Stereo

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘রমেলকে আমরা গ্রেপ্তার করব কেন? তার নামেতো কোনো মামলা নেই৷ তাকে কারা আটক করেছে সেটা আর্মির অফিসাররা বলতে পারবেন৷ তাকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাসপতালে ভর্তি করেন৷ প্রথমে নানিয়াচর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়৷ তারপর পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান হয়৷''

পিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা বলেন, ‘‘রমেলের বাবা শান্তি চাকমাসহ তার পরিবারের লোকজন এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করতে নানিয়াচর থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি৷ আর এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয় এর আগেও নির্যাতন এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ কল্পনা চাকমা'র খোঁজ আজও পাওয়া যায়নি৷'' তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাবি করেছেন কেউ থানায় মামলা করতে যায়নি৷

এদিকে রমেল চাকমাকে আটক এবং নির্যাতনে মুত্যুর ঘটনার বিচাররের ২৪ এপ্রিল রাঙামটিতে সড়ক ও জলপথ অবরোধের কর্মসূচি দিয়েছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ