চাপের মুখে মমতা
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২এই ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল, এ সাজানো ঘটনা৷ পরে কিন্তু সবকিছুই প্রমাণ হয়৷ ফলে পশ্চিমবঙ্গের মহিলা সম্প্রদায় পুরো ব্যাপারটিকে ঘিরে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন৷
দুই কন্যা সন্তানের মা এক যুবতীকে গাড়িতে লিফ্ট দেওয়ার নামে মাঝরাতে গাড়িতে তুলে নিয়ে বন্দুকের মুখে তাঁর ওপরে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে পালায় কয়েকজন যুবক৷ এই ঘটনার দুদিন পরে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করে৷ প্রাথমিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুরো ঘটনাটিই নাকি সাজানো৷ বিরোধীদের চাল৷ পরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান দময়ন্তী সেনের নেতৃত্বে বিশদ তদন্তের ফলে জানা যায় ওই মহিলা ধর্ষিতা হয়েছিলেন এবং তাঁর ওপরে শারীরিক নিগ্রহও চালানো হয়েছিল৷ ধরা পড়ে ধর্ষকদের দলটিও৷ শাস্তির ঘোষণা শোনা গেছে পার্ক স্ট্রিট থানার ওই দুই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে৷
বিষয়টিকে ঘিরে রাজ্য সরকারের এক ভিন্ন ছবি দেখা যাচ্ছে আপাতত৷ বিশেষ করে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গে মহিলারা অনেকটাই নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন৷ এ বিষয়ে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী উপালি চট্টোপাধ্যায়ের অভিমত থেকে সেটাই স্পষ্ট আকারে উঠে এসেছে৷ উপালি যেমন বলছেন, ‘ভালো লাগছে না পুরো পরিস্থিতি দেখে৷ আমি আতঙ্কিত আমি ব্যথিত, আমি ক্রুদ্ধ৷ একজন মহিলা হিসেবে আমার আতঙ্কিত লাগছে৷ ভুগছি নিরাপত্তাহীনতায়ও৷ পুলিশ বা প্রশাসন যাঁরা আমাকে নিরাপত্তা দেবেন তাঁরাই যদি আমায় সমস্যায় ফেলেন, তবে আমি কার কাছে যাব?'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি কি এতে ধাক্কা খেল? উপালি বলছেন, ‘অবশ্যই৷ রাজ্যের প্রশাসনের মাথা হয়েও তিনি এ ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য তিনি করলেন কী করে? সবকিছু প্রমাণ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি কোনরকমের ব্যাখ্যা এ পর্যন্ত দেননি৷ মমতার যে জনদরদী ইমেজ রয়েছে, উপালির মতে তা বেশ ধাক্কা খেল এই ঘটনায়৷
পরবর্তীতে এ ধরণের ঘটনা ঘটবে কিনা তার জবাবে উপালির মত, তিনি আস্থা রাখেন প্রশাসনের ওপর৷ তাঁর বিশ্বাস, এমনটা আর ভবিষ্যতে ঘটবে না৷ এর থেকে শিক্ষা নেবে প্রশাসন৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন