1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলকাতার ময়দানে ফুটবল বনাম ক্রিকেট

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৩ মে ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গের ফুটবল ও ক্রিকেটের দুই স্তম্ভে চাপানউতোর। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে মোহনবাগান সমর্থকদের অপদস্থ করার অভিযোগ শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের। অভিযোগ খারিজ করেছে শাহরুখের দল।

https://p.dw.com/p/4Rh8d
মোহনবাগান ক্লাব
ছবি: Payel Samanta/DW

কলকাতার ইডেন গার্ডেনে নাইট রাইডার্স বা কেকেআর-এর ম্যাচ থাকলে ভিড় উপচে পড়ে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে গত শনিবারের খেলাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেদিন কলকাতার খেলা ছিল লখনউ সুপার জায়েন্টস-এর বিরুদ্ধে।

এই শহরের শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার মালিকানাধীন লখনউ ফ্র্যাঞ্চাইজি মোহনবাগানের জার্সি পরে নামে বাইশ গজে। শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের সঙ্গে গাঁটছড়া রয়েছে গোয়েঙ্কাদের। সেই সূত্রে ঐতিহ্যশালী ইডেনে লখনউয়ের ক্রিকেটারদের সবুজ-মেরুন জার্সি পরার ঘোষণা আগেই করেছিলেন সঞ্জীব।

ক্লাব জার্সিতে আপত্তি

ম্যাচের দিন সংঘাতের কেন্দ্রে বাঙালির চিরপরিচিত, আবেগের সেই জার্সিই। 'মেরিনার্স এরিনা' নামে মোহনবাগান সমর্থকদের একটি সংগঠনের অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যায় তারা ক্লাব তাঁবু থেকে মিছিল করে ইডেনের উদ্দেশে যায়। প্রত্যেকের কাছে টিকিট ছিল। মাঠের কাছে এসে জনা ৭০-এর মিছিল থেকে বেরিয়ে সকলে নির্দিষ্ট গেট নম্বরের দিকে এগিয়ে যান।

মাঠে ঢোকার সময় মোহনবাগান সমর্থকদের বাধার মুখে পড়তে হয়। তাদের সঙ্গে ছিল ক্লাবের পতাকা, স্কার্ফ, ব্যানার। অভিযোগ, শাহরুখ খানের সংস্থা 'রেড চিলিজ'-এর কর্মীরা মোহনবাগান সমর্থকদের মাঠে প্রবেশে আপত্তি করেন, যেহেতু জার্সিতে ক্লাব ও স্পনসরের লোগো ছিল। এ নিয়ে তুমুল বচসা হয়। সমর্থকেরা জানিয়েছেন, জার্সি উল্টো করে পরার পর তাদের মাঠে ঢোকার অনুমতি দেন ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা।

‘কলকাতার দলে এখানকার ছেলেরা নেই কেন?’

দুই শিবিরে চাপানউতোর

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছে কেকেআর। মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''মোহনবাগানের জার্সি পরে সমর্থকদের মাঠে প্রবেশে বাধা দিয়ে স্বাধীনতা খর্ব করেছে কেকেআর ম্যানেজমেন্ট।" এই অপমানের বিহিত চেয়ে বলিউড তারকা শাহরুখকে চিঠি পাঠিয়েছেন মোহনবাগান কর্তা।

দিনদুয়েক এ নিয়ে ক্রীড়া মহলে এ নিয়ে তোলপাড় চলতে থাকার পর সোমবার মুখ খুলেছেন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। তাদের বিবৃতি, 'কেকেআর স্টেডিয়ামে আসা দর্শকদের নিয়ন্ত্রণ করে না। আমাদের জানানো হয়েছে, মাঠে বিপণনের কৌশল নিয়ে এসেছিলেন কিছু দর্শক। এটা আইপিএল-এর নীতি-বিরুদ্ধ। এই ধরনের বিপণন রোখার বিশেষ দল দর্শকদের আটকে দেয়।'

কলকাতার মাঠে খেলেছিলেন পেলে

বিপণন সংক্রান্ত নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মোহনবাগান কর্তৃপক্ষ। দেবাশিস দত্তের বক্তব্য, ''মোহনবাগানের জার্সি পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে গিয়েছি। কোথাও বাধার মুখে পড়তে হয়নি।'' মোহনবাগানের প্রশ্ন, বিশ্বকাপে লোগো নিয়ে আপত্তি না থাকলে আইপিএল-এর ক্ষেত্রে কী সমস্যা?

আবেগ না বাণিজ্য?

কলকাতার তিন প্রধানের সাবেক অধিনায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস বাগানভক্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''কেকেআরের জার্সি পরে অনেকে মোহনবাগান ম্যাচে গ্যালারিতে থাকে। তা হলে উল্টোটা হবে না কেন? সবুজ-মেরুন জার্সি নিয়ে আপত্তি করা আইনি কাজ হয়েছে বলেও মনে হয় না।''

খেলাধুলোর জগতে কর্পোরেট সংস্থার প্রবেশের ফলে ময়দানের পুরনো ছবিতে বদল এসেছে। আবেগ বনাম বাণিজ্যের তর্ক তুলে মোহনবাগানের সাবেক ফুটবলার মানস ভট্টাচার্যের প্রশ্ন, "কলকাতার দল তো এখানকার ছেলেরা নেই কেন? কেন ঋদ্ধিমান সাহাকে অন্য রাজ্যের হয়ে আইপিএল খেলতে হয়?"

ময়দানের এই লড়াইয়ে সবাই ইতি চাইছেন।পশ্চিমবঙ্গের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবি-র সাবেক কর্তা বিশ্বরূপ দে ডয়চে ভেলেকে বলেন, "দুটি দল বাংলার ফুটবল ও ক্রিকেটের স্তম্ভ। বিরোধ মিটিয়ে সকলের খেলামুখী হওয়া ভাল। সিএবি সভাপতিকে মধ্যস্থতা করতে বলব।"