কর্মকর্তাদের বরখাস্ত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর জেলেনস্কি
২৫ জানুয়ারি ২০২৩গত প্রায় এক বছর ধরে রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করে ইউক্রেন যখন আন্তর্জাতিক আঙিনায় সম্ভ্রম আদায় করে চলেছে, তারই মাঝে দুর্নীতি কেলেঙ্কারি দেশটির ভাবমূর্তির উপর কালো ছায়া ফেললো৷ সেই ধাক্কা সামলাতে প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করে প্রশাসন ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিলেন৷ এর আওতায় পাঁচ জন আঞ্চলিক গভর্নর, চার জন উপমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট দফতরের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ জেলেনস্কি বলেন, দেশের ক্ষতি এড়াতে তিনি অভ্যন্তরীণ সমস্যা দূর করা প্রয়োজন৷ রাতের ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শক্তিশালী এক রাষ্ট্রের প্রয়োজন এবং ইউক্রেন ঠিক সে রকমই থাকবে৷''
রাশিয়ার হামলার আগেই ইউক্রেনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু হয়েছিল৷ কিন্তু যুদ্ধের মাঝেও দুর্নীতির ঘটনার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ সামরিক সাহায্যের পাশাপাশি বিধ্বস্ত অর্থনীতি চালু রাখার ক্ষেত্রে ইউক্রেন বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল৷ তার উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের আবেদন করেছে সে দেশ৷ এমন সময় প্রশাসনের মধ্যে আর্থিক অনিয়ম দাতা দেশগুলির উদার সহায়তায় রাশ টানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিগাল মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে দুর্নীতি দমন অভিযানের ক্ষেত্রে অগ্রগতির উল্লেখ করে বলেন, ইইউ-র সঙ্গে সমন্বয়ের তাগিদে পদ্ধতিগত ও ধারাবাহিক কাজ অত্যন্ত জরুরি৷
ইউক্রেনের সমাজ ও ভূখণ্ড উন্নয়ন দফতরের উপমন্ত্রী ভাসিল লজিনস্কির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের জের ধরে সরকার নড়েচড়ে বসেছে৷ মাত্রাতিরিক্ত দামে জেনারেটর কেনার জন্য তিনি চার লাখ ডলার ঘুস নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ তাঁর দফতরে সেই নগদ টাকা উদ্ধারের ছবি প্রকাশ করেছে দুর্নীতি দমন দফতর৷ রাশিয়ার হামলায় বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার মাঝে জেনারটের নিয়ে এমন দুর্নীতি তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে৷
দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই জেলেনস্কির সরকার অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ায় আন্তর্জাতিক স্তরে স্বস্তি দেখা যাচ্ছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই রাজনৈতিক দলের কয়েকজন সদস্য সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ইউক্রেনের জন্য সামরিক ও মানবিক সাহায্য চালিয়ে যাবার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷
আপাতত প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রেহাই পেলেও অতীতে তাঁর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযাগ উঠেছে৷ ২০২১ সালে তথাকথিত ‘প্যান্ডোরা পেপার্স' অনুযায়ী তিনি বিদেশের কিছু অফশোর কোম্পানির নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে লন্ডনে তিনটি উচ্চ মূল্যের সম্পত্তি কিনেছিলেন৷ সে সময় তাঁর দফতর থেকে বলা হয়েছিল, যে রুশপন্থি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত' প্রশাসনের থাবা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে জেলেনস্কি এমনটা করেছিলেন৷
এসবি/এসিবি ( রয়টার্স, এএফপি)