করোনায় কড়াকড়ি ও গুজবের দেশ
২ এপ্রিল ২০২০মানে সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্য জানার কথা সাংবাদিকের, অথচ সেই মহোদয় জানতে চাইছেন আমার কাছে, আবার অবস্থানও সাত সমুদ্র ১৩ নদীর ওপাড়ে৷ বিহ্বল সরকারি কর্মকর্তা আমাকে বললেন, না, মানে কেমন যেন ঢাকঢাক গুড়গুড় চারিদিকে৷ ভালো বুঝতেছি না৷
কাল থেকে ডিএমপি কড়াকড়ি শুরু করেছে, আইএসপিআরের মাধ্যমে সেনাবাহিনী জানান দিয়েছে, আজ থেকে তারাও হবে কঠোর৷ ৮ মার্চ থেকে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর আজ পর্যন্ত ৫৬ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
২৩ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত মোটামুটি সব কিছু বন্ধের ঘোষণা আগে ছিল, পরে তা ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে৷
কিন্তু সরকারি হিসেব মেনে নিলে করোনা তো সারা দেশে ছড়ায়নি, এর বিস্তারও ভয়াবহ নয়৷ তবে কেন কড়াকড়ি বাড়ানো হচ্ছে, সতর্কতা ঢিলে হওয়ার বদলে ‘টাইট’ করা হচ্ছে? কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, আগামি দুই সপ্তাহ নাকি ভয়ঙ্কর৷ কিন্তু কোন তথ্যের ভিত্তিতে তারা তা বলছেন, আমরা জানতে পারছি না৷ সরকারি তথ্যের উপর ভিত্তি করলে তো ভাইরাস ছড়ানো বা শরীরে প্রবেশের ১৪ দিনের তত্ত্ব মানলে তো সামনের দুই সপ্তাহ নিয়ে আশঙ্কা থাকার কথা নয়৷ সরকারি কড়াকড়ি দেখে মনে হচ্ছে, সরকার নিজেই তার তথ্য বিশ্বাস করছে না৷
এরই মধ্যে আমরা যদি শুধু আজকের পত্রিকায় চোখ বুলাই তবে দেখতে পাবো, দৈনিক সমকাল লিখছে ‘করোনা উপসর্গে আরো ১৩ জনের মৃত্যু', দৈনিক যুগান্তর লিখছে ‘করোনার উপসর্গ নিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে ১৯ জনের মৃত্যু’, বাংলাদেশ প্রতিদিন লিখেছে ‘সর্দি জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১১’৷
সরকার কী করোনা ভাইরাস বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে? যদি করে তাহলে জনগণকে প্রকৃত তথ্য জানিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত৷ জনগণ প্রকৃত তথ্য না জানলে গুজবের সৃষ্টি হবে ও গুজবই বিশ্বাস করবে৷ একসময় সেই গুজব সরকারকেও গিলতে হতে পারে৷