1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা ভাইরাস, সতর্ক বাংলাদেশ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২০ জানুয়ারি ২০২০

চীনে প্রাদুর্ভাব হওয়া ‘করোনা ভাইরাস' এর বিস্তার রোধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানিং শুরু হয়েছে সোমবার থেকে৷ এ বিষয়ে বিমানবন্দরের কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দিয়েছে আইইডিসিআর৷

https://p.dw.com/p/3WTu3
Bangladesh Shahjalal International Airport, Dhaka
ছবি: bdnews24.com

নতুন এই ভাইরাসটি চীনের উহান প্রদেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে৷ ওই এলাকায় এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন; মারা গেছেন তিনজন৷

আইইডিসিআর- এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এস এম আলমগীর জানান, ‘‘চীনের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে৷ এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর প্রমাণ তারা এখনো পাননি বলে আমাদের জানিয়েছেন৷''

চীন ছাড়া অন্য কোনো দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর এখনো পাওয়া যায়নি৷ তবে থাইল্যান্ড ও জাপানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে বলে জানান ডা. এস এম আলমগীর৷
সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা কর্মী , চিকিৎসক এবং চিকিৎসায় নিয়োজিত কর্মীদের থার্মাল স্ক্যানিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়৷ এদিন থেকেই যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং শুরু হয়েছে৷ বিশেষ করে চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, হংকং এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে যে যাত্রীরা বিমানে আসছেন তাদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে৷

ডা. এস এম আলমগীর

ডা. এস এম আলমগীর বলেন, ‘‘চীনের উহান থেকে কোনো ফ্লাইট সরাসরি ঢাকায় আসে না৷ কিন্তু আমরা আশঙ্কার জায়গা থেকে চীনসহ আরো কয়েকটি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং-এর পরামর্শ দিয়েছি৷ একই সঙ্গে আইইডিসিআর-এর চিকিৎসকদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে৷ আইইডিসিআর ৪টি হটলাইন নাম্বার চালু করেছে সার্বক্ষণিক সহায়তা দেয়ার জন্য৷

‘‘করোনা-এন ভাইরাস নতুন হওয়ায় এখনো ভাইরাসটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি৷ তবে ভাইরাসটি মার্স এবং সার্সের চেয়ে কম সিভিয়ার, এটা আমরা বুঝতে পারছি৷ এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মত কোনো কারণ এখনো নাই৷''
তিনি ভাইরাসে আক্রান্তদের লক্ষণ সম্পর্কে বলেন, জ্বর দিয়ে শুরু হয়৷ এরপর কাশি, গলা ব্যথা৷ অনেকের তীব্র শ্বাসকষ্ট হয় এবং নিউমোনিয়া ডেভেলপ করে৷ বিমানবন্দরের থার্মাল স্ক্যানারে জ্বর থাকলে ধরা পড়বে৷ স্ক্যানারটা এমনভাবে সেট করা যে ১০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা হলেই কম্পিউটারের মনিটরে লাল সিগন্যাল দেখা যায়৷''

এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান বলেন,‘‘বিমাবন্দরের কর্মীদের এর আগে সার্স ভাইরাস ও সোয়াইন ফ্লু নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা আছে৷ ফলে এবার করোনা ভাইরাস হ্যান্ডেল করা সহজ হবে৷ আমরা চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলোকেই সবচেয়ে বেশি নজরদারীতে রাখছি৷ দিনে মোট তিনটি ফ্লাইট আসে চীন থেকে৷ আর বিমানবন্দরে সাধারণ যাত্রীদের জন্য মোট দুইটি থার্মাল স্ক্যানার আছে৷ সব যাত্রীকেই এই স্ক্যানারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়৷''
সোমবার অরিয়েন্টেশনের পাশাপাশি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাস্কসহ নিরাপত্তা কিট দেয়া হয়েছে৷ এরইমধ্যে হেলথ ডেস্কের বাইরেও আলাদা একটি ডেস্ক চালু করা হয়েছে৷ ডেস্কে কোনো যাত্রীর ব্যাপারে রিপোর্ট করা হলেই তাকে কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়া হবে পরবর্তী পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য৷
এছাড়া এয়ারলাইন্সগুলোকে প্যাসেঞ্জার হিস্ট্রি দেয়ার জন্য আলাদা ফরম দেয়া হয়েছে৷ যা পূরণ করে জমা দিতে হবে৷ এয়ারলাইন্সগুলোকে চীন থেকে যেসব যাত্রী আসেন তাদের সেখান থেকেই স্ক্রিনিং-এর আওতায় আনারও অনুরোধ জানানো হয়েছে৷

ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ


বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, ‘‘এই ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ প্রকাশ পায় দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে৷ তাই আমরা এখন চীন থেকে যে যাত্রীরা আসছেন তাদের সবাইকে একটি কার্ড দিয়ে দেব৷ তাতে যোগাযোগের নম্বর, ঠিকানা ও ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ সব কিছু লেখা থাকবে৷ যদি লক্ষণ দেখা যায় তাহলে তাকে আমরা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও আইইডিসিআর-এ নিয়ে পরীক্ষা করব৷ আরো কয়েকটি দেশেও এই ভাইরাসে আক্রান্তের খবর আমরা পাচ্ছি৷ ওইসব দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ব্যাপারেও একই ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''

বিমান বন্দরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখন মোট চিকিৎসক চারজন৷ ওই চারজন মিলিয়ে মোট জনবল ২০ জনের বেশি না বলে জানা গেছে৷ ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, ‘‘বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানারের আলাদা টেকনিশিয়ান আছে৷ সাধারণ যাত্রীদের জন্য দুইটি এবং ভিআইপি যাত্রীদের জন্য একটি মোট তিনটি স্ক্যানারে আমরাও রাউন্ড দ্য ক্লক লোক রাখার ব্যবস্থা করেছি৷ আর এখানে হাসপাতাল নাই৷ চিকিৎসার প্রয়োজন হলে আমরা বাইরের হাসপাতালের সহায়তা নেবো৷''