করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করা নিয়ে বিতর্ক
২৬ জানুয়ারি ২০২২জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার একের পর এক রেকর্ড ভেঙে চলেছে৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার বুধবার ৯৪০ পেরিয়ে গেছে৷ বৃহস্পতিবারই সংখ্যাটি এক হাজার পেরিয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ অথচ এক মাস আগে সেই হার ছিল ২২০৷ ইউরোপের অন্য অনেক দেশের মতো জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন সংক্রমণের কারণেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি তথ্য-পরিসংখ্যানে জার্মানির বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন ঘটছে না৷ মূলত করোনা পরীক্ষার অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপের কারণে সব মানুষের সংক্রমণ নথিভুক্ত হচ্ছে না৷
এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি নিয়ে প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বিষয়টিকে দলীয় রাজনীতির ঊর্দ্ধে রাখতে চান৷ সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত মূল্যবোধের ভিত্তিতে এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া চান তিনি৷ জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও টিকা বাধ্যতামূলক করার মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ঐকমত্যের অভাব রয়েছে৷ অর্থাৎ প্রতিটি দলের মধ্যেই এমন পদক্ষেপের পক্ষে ও বিপক্ষে মত রয়েছে৷
যাবতীয় উদ্যোগ ও প্রচার অভিযান সত্ত্বেও জার্মানিতে যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা নেন নি৷ তাই দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিকা বাধ্যতামূলক করার পক্ষে সমর্থন বাড়ছে৷ এর প্রবক্তারা সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে সংখ্যালঘু টিকা-বিরোধীদের অধিকার খর্ব করার পক্ষে সওয়াল করছেন৷
অন্যদিকে রাষ্ট্রের হাতে এমন সুদূরপ্রসারী ক্ষমতার বিরোধিতা করছেন বিরোধীরা৷ করোনা মহামারির শুরু থেকে বেশিরভাগ দলের রাজনৈতিক নেতারা করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ায় তারা বর্তমান উদ্যোগের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন৷ তাদের মতে, বাস্তবে এমন পদক্ষেপের কোনো প্রয়োজনও নেই৷
বুধবার সংসদে প্রাথমিক বিতর্ক সত্ত্বেও এখনই কোনো আইনের খসড়া পেশ করা হচ্ছে না৷ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লাউটারবাখ বক্তব্য রাখবেন বলে শোনা যাচ্ছে৷ চ্যান্সেলর শলৎস আপাতত বিতর্ক থেকে নিজেকে দূরে রাখছেন৷ তবে কোনো আইন প্রণয়ন হলে সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার পক্ষে সমর্থন জানাবেন বলে আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করতে আইনি খসড়া এখনো প্রস্তুত না হলেও শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের এর আওতায় আনার বিষয়ে ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)