টিকা বাধ্যতামূলক করার পথে জার্মানি
১ ডিসেম্বর ২০২১জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের গতি আপাতত কিছুটা থমকে গেলেও পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা কমছে না৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার পর পর দুই দিন সামান্য হলেও কিছুটা কমেছে৷ বুধবার সেই মাত্রা ৪৪২ ছুঁয়েছে৷ মঙ্গলবার বিদায়ী চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে আরও কড়া নীতি সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন৷ বৃহস্পতিবার আবার এক বৈঠকে সুস্পষ্ট পদক্ষেপগুলি ঘোষণা করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন৷
জার্মানির সাংবিধানিক আদালত মঙ্গলবার লকডাউন ও স্কুল বন্ধ রাখার সরকরি সিদ্ধান্তের বৈধতা মেনে নিয়েছে৷ মহামারি মোকাবিলা করতে ‘এমারজেন্সি ব্রেক'-এর আওতায় সরকার দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে আদালত মনে করে৷ তবে ভবিষ্যতেও এমন কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হলে উপযুক্ত কারণ দেখাতে হবে এবং পদক্ষেপের মেয়াদ সীমিত রাখতে হবে৷ বিদায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেন, যে সব রাজনৈতিক দল কড়া পদক্ষেপের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে সংশয়ের দোহাই দিয়ে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে আসছে, আদালতের এই রায়ের ফলে তাদের নতুন করে ভাবনাচিন্তা করতে হবে৷
জার্মানিতে করোনা সংকট মোকাবিলায় আপাতত কিছু কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগও নিতে চায় শলৎসের নেতৃত্বে ভবিষ্যৎ জোট সরকার৷ সব সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই সংসদের অনুমোদনের উপর জোর দিচ্ছেন শলৎস৷ যেমন তিনি চান, আগামী বছরের শুরুতেই করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার প্রশ্নে সংসদ সদস্যরা হুইপ ছাড়াই নিজেদের বিবেক অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন৷ সংসদ সদস্য হিসেবে শলৎস নিজে সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন৷ চলতি বছরের শেষেই সংসদে প্রস্তাবের খসড়া পেশ করা হবে৷
আগামী বড়দিন উৎসবের আগেই আরও তিন কোটি করোনা টিকা দেবার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে বিদায়ী ও সম্ভাব্য সরকার৷ টিকাদান কেন্দ্র ও ডাক্তারের চেম্বারের পাশাপাশি ওষুধের দোকানেও সেই টিকা দেবার ব্যবস্থা করা হবে৷ জার্মান সেনাবাহিনীর এক জেনারেলের নেতৃত্বে এক বিশেষজ্ঞ কমিটি টিকাদান ও করোনা সংকট মোকাবিলায় অবদান রাখবে৷ তবে তার আগে সংক্রমণের হার কমাতে এবং করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সম্ভাব্য তাণ্ডব রুখতে বৃহস্পতিবার আরও কড়া পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে৷ বিশেষ করে সুযোগ সত্ত্বেও টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষদের সম্ভবত দোকানবাজারেও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না৷ তারা শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন৷ মানুষের ভিড় হয়, এমন সমাবেশ নিয়ন্ত্রণেও কড়া নিয়ম স্থির করা হবে৷
ফেডারেল স্তরে আরও কড়াকড়ির ঘোষণার আগেই বেশ কয়েকটি রাজ্য সেই পথে এগোচ্ছে৷ বিশেষ করে টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষের উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)