1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কমিশন গঠন করে গ্রহণযোগ্য কোটার মাত্রা ঠিক করা যেতে পারে: সামান্তা শারমীন

২১ জানুয়ারি ২০২৫

আবার দেখা গেল কোটাবিরোধী আন্দোলনের ঝলক৷ তার রেশে ২০২৪-২৫ সালের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্বাচিতদের ভর্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও এখনো হয়নি সমাধান৷

https://p.dw.com/p/4pR78

গত রবিবার ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এতেই সামনে আসে কোটার প্রশ্ন। মেধায় ৭৩ নম্বর পেয়েছেন এমন প্রার্থী ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হতে পারেননি, কিন্তু কোটায় ৪১ নম্বর পেয়েও নির্বাচিত হতে পেরেছেন। বিষয়টি নিয়ে সেদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি লিখেন, "ভর্তি পরীক্ষায় এখনো কিসের কোটা? আজ থেকেই এই শোষণের শেষ হতে হবে। ফুলস্টপ।”

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি রাখার প্রতিবাদে রবিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এ সময় তারা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, এক কঠিন গণআন্দোলনের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচার পতনের ইতিহাস লেখা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, এই কোটা আন্দোলনের মাধ্যমেই সেই গণআন্দোলনের শুরু। কিন্তু বর্তমান সরকারের ছয় মাস হয়ে গেলেও এখনো কোটা প্রথার বিলুপ্তি দেখা যায়নি। এখনো কেউ কোটার জোরে ৪১ পেয়ে চান্স পায়, আরেকজন ৭৩ পেয়েও চান্স পায় না। যেই বৈষম্য নিরসন করতে গিয়ে রাজপথে নামতে হয়েছিল, সেই বৈষম্য দূর করতে যদি আবারও নামতে হয়, তাহলে এই সরকারেরও পরিণতি হাসিনার মতো হবে।স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে দেওয়া শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এবার মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য সিট বরাদ্দ করা হয়েছে ২৬৯টি, যা গতবার ছিল ১০৮টি। যেখানে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কাট মার্ক ৭৩ দশমিক ৭৫, সেখানে ৪০ মার্ক পেয়ে কয়েকজন চান্স পেয়েছেন। উপযুক্ত মার্ক না পেয়েও অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা কোটার মাধ্যমে দেশের শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল কলেজে সুযোগ পান। আমরা এই বৈষম্য কোনোভাবেই মেনে নেবো না। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রাণ দিলো, অথচ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পোষ্য কোটা আজও বহাল আছে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা নিয়ে কথা উঠেছে। সরকারের পাঁচ মাস হয়ে গেল, অথচ শিক্ষার্থীদের অনূভূতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছে না।

সোমবার দিনভর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমাধান হয়নি। তাদের হাতে হাইকোর্টের রায় ও সরকারের প্রজ্ঞাপন আছে। সে আলোকে তারা কোটা রেখেছেন। এর বাইরে তাদের যাওয়ার সুযোগ নেই।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমীন ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সরকার সাড়ে ৫ মাসেও কোটার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। এটা দুঃখজনক। কোটা কোনো যৌক্তিক পদ্ধতি না। এটা আধুনিক কোনো দেশের প্রত্যাশিত পদ্ধতি হতে পারে না। তবে বাংলাদেশের কিছু বাস্তবতা আছে। এখানে আসলেই কিছু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আছে। এখানে নারীরা যাতে এগিয়ে আসতে না পারে, সে আয়োজন আছে। বিভিন্ন শুমারি ও গবেষণাকে সামনে রেখে অংশীজনদের সঙ্গে বসে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে একটি কমিশন গঠন করে গ্রহণযোগ্য কোটার মাত্রা ঠিক করা যেতে পারে। আবার আমরা কিন্তু তাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা এখনো দিতে পারিনি। তাহলে একটা জনগোষ্ঠী থেকে একজন কোটায় চাকরি পেল তাতে ওই জনগোষ্ঠীর কি লাভ হবে? ফলে আমাদের সবকিছু নিয়েই সমাধানে যেতে হবে।”