কঠোর শিশু শ্রমিক আইন
৩০ আগস্ট ২০১২বিশ্বে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ভারতে সবথেকে বেশি৷ ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ৫ থেকে ১৪ বছরের নীচে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা এক কোটি ২৭ লাখ৷ এর মধ্যে স্রেফ পশ্চিমবঙ্গেই আছে আনুমানিক সাড়ে ৮ লাখ৷ প্রধান কারণ দারিদ্র্য ও সামাজিক সুরক্ষার অভাব৷ উন্নত শিক্ষা পরিকাঠামোর অভাবে স্কুল ছুট বাচ্চাদের সংখ্যা বৃদ্ধি৷ এছাড়া আছে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধান৷ বিশ্বায়নের নব্য অর্থনীতির ফলে বাড়ছে বেকারত্ব, মিটছেনা মৌলিক চাহিদা৷
শিশু শ্রমিক রোধে সরকার শিশু আইন সংশোধন করে তা আরো কঠোর করেছে৷ বিপজ্জনক বা অ-বিপজ্জনক কোন কাজে ১৪ বছরের নীচের কোন বাচ্চা নিয়োগ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ খনি, খাদান, পাথর ভাঙা, বাজি বা বিস্ফোরক পদার্থ তৈরির কারখানায় বয়সসীমা ১৮ বছরের ওপরে৷ শিশু শ্রমিক নিয়োগকে আইনি অপরাধ বলে গণ্য করা হবে৷ আইন সংশোধনের ফলে ভারত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার নির্ধারিত নিয়মবিধির স্তরে উন্নীত হলো৷
আইন আমান্য করলে সর্বোচ্চ তিন বছর জেল এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হতে পারে৷ আগে ছিল এক বছরের জেল এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা৷ এই আইন বলবৎ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলা শাসককে৷ নজরদারির দায়িত্ব রাজ্যের শ্রম বিভাগের৷
শিশু সুরক্ষা নিয়ে কাজ করছে এমন একটি এনজিওর সভাপতি রবিশঙ্কর ঘোষ প্রশ্ন তুলে ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘মনটা যেভাবে তৈরি হয়েছে তাতে আমরা সত্যিই কী চাই দেশ থেকে শিশু শ্রমিক বন্ধ হোক? সেটা নিয়েই সংশয়৷ অনেকে চায়না বন্ধ হোক৷ মনে করে বাচ্চারা কাজ করুক৷ পরিবারে দুটো পয়সা আসবে৷ ওদের প্রতি অবিচারের কথা মাথায় রাখেনা৷ এই নিয়ে সমাজ দ্বিধাবিভক্ত৷''
রবিশঙ্করবাবু মনে করেন, ‘‘শুধু আইন প্রণয়ন করলেই হবেনা৷ তার সার্থক রূপায়ন দরকার৷ জেলাশাসকের উচিত, এনজিও এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটা টাস্ক ফোর্স গঠন করে সেটাকে আনতে হবে পঞ্চায়েত, ব্লক ও পুরসভা স্তরে৷ সেই সঙ্গে পালটাতে হবে আমাদের মানসিকতা৷''
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন