আন্দোলনে বিএনপি, প্রচারে আওয়ামী লীগ
১৬ আগস্ট ২০১৩বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ১৭ই আগস্ট৷ জোটের নেতাদের বৈঠক পরদিন ১৮ই আগস্ট৷ সেদিনই আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে৷ এরপর ১৯শে আগস্ট আন্দোলনের দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন খালেদা জিয়া৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, তাঁরা কোনোভাবেই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন না৷ কারণ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবেনা৷ এতদিন তাঁরা সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার দাবি মেনে নেয়ার সময় দিয়েছেন, কিন্তু সরকার তাঁদের দাবিকে কোন গুরুত্ব দেয়নি৷ তাই দাবি আদায়ে এবার তাঁরা চূড়ান্ত ভাবে মাঠে নামছেন৷ তাঁরা হরতাল, অবরোধ এবং অসহযোগের মত কর্মসূচিও দিতে পারেন৷
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেকজন সদস্য হান্নান শাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতারা আন্দোলনের জন্য সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বেন৷ আন্দোলনে নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করা হবে৷ ১৯শে আগস্টের বৈঠকে খালেদা জিয়া কোন নেতা কোন জেলায় যাবেন, তা ঠিক করে দেবেন৷'' তিনি আরও জানান, সরকারকে আর সময় দেয়া হবেনা৷ তাঁর মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি কোনো দলীয় দাবি নয়৷ দেশের ৯০ ভাগ মানুষ নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়৷ জনগণের এই দাবিকে সরকার মেনে নিতে বাধ্য হবে৷ আন্দোলনের মাধ্যমেই এখন দাবি আদায় করা হবে৷
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আন্দোলন করে কোনো দাবি আদায় করা যাবেনা৷ তিনি বলেন, আন্দোলন করে কোনো লাভ হবেনা৷ আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান খুঁজতে হবে৷ তিনি জানান, যথা সময়ে নির্বাচন হবে৷ সবাই নির্বাচনে আসবে বলে তাঁর আশা৷ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা নির্বাচনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন৷ আওয়ামী লীগের নির্বাচন এবং উন্নয়নের প্রচারণা একই সঙ্গে শুরু হয়েছে৷ এখন এটা আরো সর্বাত্মকভাবে শুরু হবে৷
জানা গেছে, এ জন্য আগামী ১৮ই আগস্ট গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ঐ বৈঠকে প্রচার-প্রচারণার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে৷ এর আগে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ঢাকা শহরে বিলবোর্ড প্রচারণার পর সারা দেশে প্রচারণায় নামবেন তারা৷ শুধু সরকারের উন্নয়নই নয়, বিরোধীদের অপপ্রচারের জবাব দেয়া হবে এই প্রচারণায়৷
জানা গেছে, প্রচার কৌশল হিসেবে এবার আওয়ামী লীগ প্রচলিত পদ্ধতির পাশাপাশি তথ্যচিত্র, রোড-শো, পথসভা, পোস্টার ব্যবহার করবে৷ বিটিভি ছাড়াও বেসরকারি টেলিভিশনে তারা চাঙ্ক কিনে নিয়ে উন্নয়নের প্রচারণা চালাবে৷ হেফাজতে ইসলামের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রামাণ্য চিত্র বানান হচ্ছে৷ এই প্রচারণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও ব্যবহার করা হবে৷ এই প্রচার টিমের সঙ্গে যুক্ত আওয়ামী লীগের সহ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে জানান, এ জন্য তাঁরা রাত দিন কাজ করছেন৷ তাঁরা অপপ্রচারের জবাব দেবেন যৌক্তিকভাবে৷ প্রচার পদ্ধতি হবে শৈল্পিক এবং দৃষ্টি নন্দন৷