কট্টর-ডানপন্থিদের ঠেকাতে জার্মানিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
কট্টর-ডানপন্থি দল এএফডির উত্থানে উদ্বেগ বাড়ছে জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে৷ অভিবাসনবিরোধী দলটিকে নিষিদ্ধের দাবিও উঠেছে বিভিন্ন শহরের প্রতিবাদ, বিক্ষোভে৷
কোলনে ৩০ হাজার মানুষ
মঙ্গলবার কোলন শহরে এএফডি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ৩০ হাজার মানুষ জড়ো হন৷ টানা পাঁচদিন ধরে জার্মানির বিভিন্ন শহরে চলছে এই প্রতিবাদ৷
‘ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রীদের জোট’
কোলন শহরে জড়ো হওয়ারা বিভিন্ন বার্তা নিয়ে হাজির হন৷ একজন প্ল্যাকার্ডে ‘ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে সব গণতন্ত্রীদের জোট’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ নানা ইস্যুতে ক্ষমতাসীনদের জনপ্রিয়তা হ্রাস আর ডানপন্থি দলের সমর্থন বাড়ায় কেউ কেউ লিখে এনেছেন, ‘বর্ণবাদীরা বিকল্প হতে পারে না৷’
চ্যান্সেলরের সমর্থন
কোলনের এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে স্বাগত জানিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও৷ তিনি বিক্ষোভকারীদের উৎসাহ ও সাহস জোগাতে বার্তা দিয়েছেন৷ দেবেন ই বা না কেন? এএফডির উত্থানে যে বড় ধরনের দুশ্চিন্তায় পড়েছে ক্ষমতাসীনেরা৷
‘নাৎসিদের সরকারে নয়’
একইদিনে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ এসেনে অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি বা এএফডি দলটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন৷ ‘নাৎসিদের সরকারে নয়’, ‘ধূসর নয়, রঙিনকে বেছে নিন’, এমন স্লোগান দেন তারা৷
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লাইপসিশ
এএফডি ছাড়াও উগ্র-রক্ষণশীল দল ভ্যালুস ইউনিয়ন নামের আরেকটি দলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন পূর্বের শহর লাইপসিশের মানুষ৷ মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে শহরের ফেডারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কোর্টের সামনে জড়ো হন তারা৷ ‘ফ্যাসিবাদ আর কখনো নয়’, ‘এএফডিকে না’, ‘এএফডি নাৎসি দল’, এমন স্লোগান দেন তারা৷ সোমবার এই বিক্ষোভে পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ৷
গ্য়োটিঙেনে মুখোমুখি
শনিবার গ্য়োটিঙেনে বিক্ষোভ করেছেন উগ্র ডানপন্থার পক্ষ ও বিপক্ষের মানুষ৷ ডানপন্থাবিরোধী জোট নামে একটি পক্ষ পুলিশের বাধার সামনে রাস্তায় বসে পড়েন (ছবিতে)৷ একই সময়ে ডানপন্থি ১০টি সংগঠনের সদস্যরা লোয়ার স্যাক্সনির শহরটিতে পাল্টা প্রতিবাদ করেছেন৷
বার্লিনে ঐক্যের ডাক
তার আগে রোববার বার্লিনে প্রতিবাদে শামিল হন ২৫ হাজার মানুষ৷ ফ্রাইডে ফর ফিউচারসহ বিভিন্ন এনজিও ও আন্দোলনকর্মীরা এতে অংশ নেন৷ কট্টর ডানপন্থার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের মূল্যবোধের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ঐক্যের ডাক দেন তারা৷
প্রতিবাদে সরকারও
এএফডির কর্মকাণ্ড নিয়ে চিন্তায় আছে সরকারও৷ একদিকে তাদের জনপ্রিয়তা কমছে, অন্যদিকে ডানপন্থিদের বাড়ছে৷ এমন পরিস্থিতিতে অস্তিত্ব রক্ষায় জোট সরকারের তিন দলের নেতারাও ডানপন্থা ঠেকানোর দাবিতে মানুষের সাথে শামিল হয়েছেন৷ রোববার পটসডামে এসপিডির নেতা জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস, গ্রিন পার্টির নেত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকও বিক্ষোভে অংশ নেন।
যে কারণে ক্ষোভ
অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম কারেকটিভ জানিয়েছে, সম্প্রতি পটসডামে এএফডিসহ উগ্র ডানপন্থি দলগুলো একটি বৈঠক করে৷ নির্বাচনে জয়লাভের পর ‘রিমাইগ্রেশন’ বা জার্মানিতে আসা অভিবাসীদের কীভাবে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়- সেই কৌশল নিয়ে তারা আলোচনা করে৷ এই বৈঠকে জার্মান পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে কারেক্টিভ৷ এমন পরিস্থিতিতে এএফডিকে নিষিদ্ধ করার দাবি আবারো জোরালো হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহলে৷