কচুরিপানা বদলে দিয়েছে তাঁদের জীবন
১২ এপ্রিল ২০১৪বলছিলাম বরিশালের নারীদের কথা৷ প্রায় ২০ বছর ধরে সেখানকার কয়েকটি অঞ্চলের নারী কচুরিপানা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরির কাজ করছেন৷ তাঁদের এই পণ্যগুলো প্রায় ২০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে৷
শুরুতে ‘মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি' নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বরিশাল অঞ্চলের নারীদের উন্নয়নে কাজ শুরু করে৷ এখন সেই কাজটা এগিয়ে নিচ্ছে এমসিসির তৈরি সংস্থা ‘প্রকৃতি'৷
কথা হচ্ছিল প্রকৃতি-র ডিজাইনার সুরাইয়া চৌধুরীর সঙ্গে৷ তিনি জানান, প্রকৃতির নারীরা কচুরিপানা থেকে প্রথমে কাগজ তৈরি করে৷পরে সেই কাগজ দিয়ে ছবির অ্যালবাম, নোটবুক, গহনা, ঝুড়ি, গিফট বক্স, গ্রিটিংস কার্ড, মালা ইত্যাদি তৈরি করা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের ফেয়ার ট্রেড কোম্পানি ‘টেন থাউজেন্ড ভিলেজেস' প্রকৃতির তৈরি পণ্য সবচেয়ে বেশি কেনে৷ এছাড়া জাপানের ‘পিপল ট্রি লিমিটেড', ইটালির ‘সিটিএম' সহ মোট ২০টি দেশে তাদের পণ্য রপ্তানি হয় বলে জানান সুরাইয়া৷
তিনি বলেন, বরিশালের যেসব নারী এই কাজে যুক্ত তাদের জীবনে এসেছে বিশাল পরিবর্তন৷ ‘‘আগে তাঁরা কচুরিপানা সিদ্ধ করে খেতেন৷ এখন অনেকের সন্তান লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হয়েছে৷ প্রায় ৫০ শতাংশ নারীর সন্তান গ্রাজুয়েট৷ আর ছোট ছেলেমেয়েরা সবাই স্কুলে যাচ্ছে৷'' এখন প্রায় এক হাজারেরও বেশি নারীর প্রকৃতির হয়ে কাজ করছেন বলে জানান সুরাইয়া৷
কচুরিপানাকে কাজে লাগানোর জন্য শুধু যে এলাকার নারীদের উন্নয়ন হচ্ছে তা নয়, এর মাধ্যমে পরিবেশও রক্ষা হচ্ছে৷ কারণ বরিশাল অঞ্চলে প্রচুর কচুরিপানার জন্য আগে লঞ্চ, নৌকা চলতে পারত না৷ তাছাড়া সেগুলো পোকামাকড়েরও আবাস হয়ে থাকত৷