ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে পম্পেওর সফর নিয়ে বিতর্ক
২০ নভেম্বর ২০২০এ বার ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক বা পশ্চিম তীর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ট্রাম্প প্রশাসনের। মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেও ইসরায়েল সফরে গিয়ে আচমকাই পশ্চিম তীরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই প্রথম কোনো মার্কিন সচিব পশ্চিম তীরে গেলেন। সেখানে গিয়ে তিনি বলেছেন, পশ্চিম তীরে তৈরি হওয়া জিনিস 'মেড ইন ইসরায়েল' বলেই বিদেশে রপ্তানি করা উচিত। কারণ, এটি ইসরায়েলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পম্পেও-র এই মন্তব্যের পরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে ফিলিস্তিন এবং আরব বিশ্বে।
ট্রাম্প মানেই বিতর্ক। গত চার বছরে অ্যামেরিকা তো বটেই, গোটা বিশ্বই তা বুঝে গিয়েছে। নির্বাচনে জো বাইডেন জিতলেও বিতর্ক থামাননি ট্রাম্প। এখনও পদ ছাড়তে রাজি হননি তিনি। গত চার বছরে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প এবং পম্পেও। কিছু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। এই মুহূর্তে আফগানিস্তান থেকে সেনা ফেরানো নিয়ে নতুন বিতর্ক জড়িয়েছেন। তারই মধ্যে, প্রেসিডেন্সির একেবারে শেষ অধ্যায়ে পম্পেওকে ইসরায়েল সফরে পাঠান ট্রাম্প।
পম্পেওর ইসরায়েল সফরের উদ্দেশ্য ছিল নেহাতই ধন্যবাদ জ্ঞাপন। গত চার বছরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের। সে কারণেই তাঁর সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাতে গিয়েছিলেন পম্পেও। কিন্তু ইসরায়েল পৌঁছে তিনি ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই প্রথম কোনো মার্কিন সচিব পশ্চিম তীর গেলেন। সেখানে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সময়ও কাটান তিনি। ঘুরে দেখেন কয়েকটি অস্থায়ী ক্যাম্প। সেখান থেকে ফিরেই বিতর্কিত মন্তব্যটি তিনি করেন। এখানেই শেষ নয়। পম্পেও গোলান হাইটসেও যান। সিরিয়ার থেকে ১৯৬৭ সালে এই অংশটি দখল করে ইসরায়েল। এই জায়গাটি নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। গোলান হাইটসকেও পম্পেও ইসরায়েলের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে ঘোষণা করে দেন।
পশ্চিম তীর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের বিতর্ক রয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলেও পশ্চিম তীর বিতর্কিত অংশ বলে চিহ্নিত। যে কারণে, এলাকাটি ইসরায়েলের দখলে রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মহলে উল্লেখ করা হয়। গোলান হাইটস নিয়েও একই বিতর্ক রয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। কিন্তু পম্পেও-র বক্তব্য একপ্রকার স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলকে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
ফিলিস্তিনের নেতা এবং বিভিন্ন আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হানান আশরাউই বলেছেন, ''ট্রাম্প প্রশাসনের আরও একটি বেআইনি এবং অবৈধ বক্তব্য শুনলাম আমরা। তারা যে আন্তর্জাতিক আইনেরও তোয়াক্কা করে না, তা আরো একবার প্রমাণিত হলো। পম্পেও-র মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করছি। এর ফলে সমস্যা আরো বাড়লো।''
অন্যদিকে সিরিয়ার সরকার পম্পেও-র গোলান হাইটসে যাওয়া এবং তা ঘিরে মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সরকারের বিবৃতিতে পম্পেওকে নেশাগ্রস্ত বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যাওয়ার আগে নতুন এক অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করে দিয়ে গেল ট্রাম্প প্রশাসন।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)