ওয়ানডেতে ভারত পাকিস্তানের ৪১ বছর

ভারত-পাকিস্তানের প্রথম ওয়ানডে সিরিজটি হয়েছিল পাকিস্তানে, ১৯৭৮ সালে৷ কোয়েটায় তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি ৪ রানে জিতেছিল ভারত৷ তবে শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল পাকিস্তান৷

গত কয়েক বছরে দু-একটা ব্যতিক্রম বাদে ভারত যে ধারাবাহিক সাফল্য পাচ্ছে, এমন সময় পাকিস্তানেরও ছিল৷তখন ভারতের জয়ই ছিল বিরল৷ তাই দু’ দেশের মধ্যে হওয়া ১৩২টি ওয়ানডেতে এখনো পাকিস্তানের সুস্পষ্ট প্রাধান্য৷ পাকিস্তান জিতেছে ৭৩টি ম্যাচে আর ভারত ৫৫টিতে৷বাকি ৪ ম্যাচে কোনো ফলাফল আসেনি৷

ওয়ানডেতে সবমিলিয়ে পাকিস্তান বেশি জয় পেলেও বিশ্বকাপে চিত্রটা একেবারে উল্টো৷ এখানে ভারতের বিপক্ষে একটা জয়ও নেই তাদের৷ এবারের বিশ্বকাপে প্রথম পর্বে আবার পাকিস্তানকে (ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে) ৮৯ রানে হারানোয় বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত হওয়া সাত ম্যাচের সবগুলোতেই জিতেছে ভারত৷

এখানেও ভারত এগিয়ে৷ ২০০৫ সালে বিশাখা পট্টনমে ৯ উইকেটে ৩৫৬ রান করেছিল ভারত৷ এখনো সেটিই সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর৷ পাকিস্তানের সেরা স্কোর ৩৩৮/৪ (ওভাল, ২০১৭)৷

১৯৭৮ সালে প্রথম সিরিজটা জয় দিয়ে শুরু করলেও শিয়ালকোটে পরের ম্যাচে ৩৪.২ ওভারে মাত্র ৭৯ রানে অলআউট হয়েছিল ভারত৷ এখনো সেটাই সবচেয়ে কম রানের ইনিংস৷ পাকিস্তানের সর্বনিম্ন ইনিংসটি ৮৭ রানের৷ ১৯৮৫ সালে শারজায় এমন ব্যাটিং বিপর্যয় হয়েছিল ইমরান খানের পাকিস্তানের৷

২০০৪ সালে করাচিতে দু’ দলের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটেই ঝড় উঠেছিল৷ তাই সেই ম্যাচে উঠেছিল ৬৯৩ রান৷

রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়টি পেয়েছে পাকিস্তান৷ ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের ওভালে ভারতকে ১৮০ রানে হারিয়েছিল তারা৷ ভারত ১৪০ রানে সবচেয়ে বড় জয়টি পেয়েছিল ঢাকায়, ২০০৮ সালে৷ উইকেটের ব্যবধানে জয়ে দু’ দলই সমান৷ পাকিস্তান ১৯৯৭ সালে লাহোরে ভারতকে হারিয়েছিল ৯ উইকেটে৷ ২০১৮ সালে দুবাইতে একই ব্যবধানে জয় পেয়ে যায় ভারত৷

১৯৭৮ সালে কোয়েটায় ভারত যে ৪ রানে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল সেটাই এখনো সবচেয়ে কম রানে জয়ের রেকর্ড৷ ১৯৯১ সালে শারজায় পাকিস্তানও ৪ রানে হারিয়ে সেই রেকর্ড ছুঁয়েছে৷ এছাড়া পাকিস্তান ভারতকে দুইবার (শারজা ১৯৮৬, ঢাকা ২০১৪) এক উইকেটে হারিয়েছে৷ উইকেটের হিসেবে ভারতের সবচেয়ে কম ব্যবধানের জয় তিন উইকেটের৷ এভাবে ভারতের কাছে মোট চারবার হেরেছে পাকিস্তান৷

ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসটি এখনো পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার সাঈদ আনোয়ারের৷ ১৯৯৭ সালে চেন্নাইয়ে ১৯৭ রান করেছিলে তিনি৷ তার সবচেয়ে বেশি কাছে যেতে পেরেছেন বিরাট কোহলি৷২০১২ সালে ঢাকায় কোহলি ১৮৩ রানে আউট হয়ে যাওয়ায় সাঈদ আনোয়ারের রেকর্ডটির স্থায়ীত্ব আরো বেড়ে যায়৷

দুই দেশের দুই জন ব্যাটসম্যান ৫টি করে সেঞ্চুর করে এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে৷ ভারতের শচীন টেন্ডুলকার আর পাকিস্তানে সালমান বাট৷

হ্যাঁ, ভারত-পাকিস্তানের ওয়ানডে রেকর্ডে সবচেয়ে বেশি শুন্যের রেকর্ডে আফ্রিদির নামই লেখা আছে৷ মোট ছয়বার শুন্যতে আউট হয়েছেন তিনি৷ ভারতের সাবেক পেসার জাভাগাল শ্রীনাথও আছেন তার সাথে৷

৪৮ ম্যাচে ৬০ উইকেট নিয়ে এখানে সবচেয়ে এগিয়ে ওয়াসিম আকরাম৷ ভারতের পক্ষে ৩৪ ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ৫৪ উইকেট নিয়েছেন অনিল কুম্বলে৷

ওয়াসিম আকরাম আর ওয়াকার ইউনিসের কারণে দলে নিয়মিত সুযোগ পেতেন না আকিব জাভেদ৷ কিন্তু সুযোগ এলে ঠিকই নিজের জাত চেনাতেন ডানহাতি এই সাবেক ফাস্ট বোলার৷ দু’ দেশের ওয়ানডে দ্বৈরথে ম্যাচসেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটি এখনো তার৷ ১৯৯১ সালে শারজায় ৩৭ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি৷ ভারতের হয়ে সেরা বোলিং এখনো সৌরভ গাঙ্গুলির নামে লেখা৷ ১৯৯৭ সালে টরন্টোয় ১৬ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি৷