শচীন যুগের অবসান
২৩ ডিসেম্বর ২০১২৪৬৩ ওয়ানডে ম্যাচ, মোট রান ১৮,৪২৬ আর ৪৯টি সেঞ্চুরি৷ সবগুলোই বিশ্ব রেকর্ড৷ টেস্টের দিকে তাকানো যাক৷ ১৯৪ ম্যাচে মোট ১৫,৬৪৫ রান৷ সেঞ্চুরি ৫১টি৷ এগুলোও সব বিশ্বরেকর্ড৷ আসলে ক্রিকেটে তার চেয়ে বেশি আর কেউ দিতে পারবে কিনা, সেটি নিয়ে বহু ক্রিকেট বোদ্ধার সন্দেহ আছে৷ অন্তত এই যুগে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না৷ দেখা যাক, হয়তো বহু বছর পর আবারও কোন টেন্ডুলকারের জন্ম নেবে৷ তখন হয়তো এই রেকর্ডগুলো পুরনো হয়ে যাবে৷ তার আগে এখনকার ‘লিটল মাস্টার'কে নিয়েই কথা বলবো৷
যাবো যাবো করেও যাওয়া হচ্ছিলো না৷ কারণ ব্যক্তিগত অর্জন তো সবই হয়ে যাচ্ছে কিন্তু দলকে যে এখনও দেওয়া বাকি৷ ২০১১ সালে নিজের ষষ্ঠ বিশ্বকাপে এসে সেটিও পেয়ে গেলেন টেন্ডুলকার৷ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের একজন হবেন, সারাজীবনের সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পর আরেকটি বাকি ছিলো, সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি৷ গত মার্চে এশিয়া কাপে ঢাকাতে বাংলাদেশ দলের বিরুদ্ধে সেটিও পেয়ে গেলেন৷ ঢাকার নামটি তাই বিশেষভাবে মনে করবেন টেন্ডুলকার৷ শেষ ম্যাচটিও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেললেন এই ঢাকাতেই৷ শেষ ম্যাচেও তাঁর হাফ সেঞ্চুরি৷
এরপর থেকে গুঞ্জন উঠছিলো আর কত? বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে ভারতীয় দলের যে শোচনীয় অধঃপতনের শুরু, তার জন্য দলের পুনর্গঠন প্রয়োজন৷ তাই আগামী বিশ্বকাপের দল তৈরির জন্য নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ৩৯ বছরের শচীন টেন্ডুলকার৷ রোববারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান ওয়ানডে ক্রিকেটে আর খেলবেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘আগামী ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া দরকার৷ দলের ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা রইলো৷'' একই সঙ্গে সমর্থকদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি৷
টেন্ডুলকারের কিছু রেকর্ড
ভারতীয় ওয়ানডে দলে অভিষেক হয় ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজে৷ প্রথম ম্যাচেই শূন্য রানে আউট হন তিনি৷
প্রথম সেঞ্চুরি পেতে ৭৯ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় টেন্ডুলকারকে৷ ১৯৯৪ সালে কলম্বোতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম সেঞ্চুরি পান তিনি৷
২০১০ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন৷ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে তিনটি ছয় আর ২৫ টি চারের সাহায্যে অপরাজিত ২০০ রান করেন৷
২০১২ সালের মার্চে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১১৪ রান করেন৷ এটি ছিলো তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি৷
টেস্টে সর্বোচ্চ ৫১টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি হাফ সেঞ্চুরিও তাঁর, মোট ৬৬টি৷
আরআই / এএইচ (রয়টার্স, এএফপি, ইন্টারনেট)