‘ওম তেলোলেৎ ওম’! চাচা, হর্ন বাজাও!
২৩ ডিসেম্বর ২০১৬‘ওম তেলোলেৎ ওম’-এর মর্ম ভেদ করতে হলে সুদূর ইন্দোনেশিয়ায় যেতে হবে৷ বাহাসা ইন্দোনেশিয়া, অর্থাৎ ইন্দোনেশীয় ভাষায় বয়সে বড় মানুষদের ‘ওম’ বলে সম্ভাষণ করতে হয়৷ কথাটা নাকি এসেছে ওলন্দাজ ভাষা থেকে; মানে দাঁড়ায় চাচা বা দাদা বা মিস্টার বা ‘ও মশাই’৷ আর ‘তেলোলেৎ’ হলো ইন্দোনেশীয় ভাষায় গাড়ি বা বিশেষ করে বাসের ইলেকট্রিক হর্নের আওয়াজ: বাংলায় হলে আমরা হয়তো বলতাম, ঐ যে, ভেঁপু-ভেঁপু বা ভ্যাঁপো-ভ্যাঁপো করে যে হর্ন বাজছে৷
বহুদিন আগের কথা৷ কলকাতায় গড়িয়াহাট মার্কেটে কাঁচাবাজার সেরে পায়ে হেঁটে ট্রাম স্টপের দিকে যাচ্ছি৷ কে এক সাইকেল রিকশা চালানেওয়ালা ছোকরা অকারণে ভেঁপু-ভেঁপু করে মনের সুখে তার রিকশার রাবারের হর্ন বাজাতে বাজাতে চলেছে৷ আমি ধমক দিয়ে বললাম, ‘অ্যাই, অকারণে হর্ন বাজাচ্ছিস কেন?' ছোকরা কী বলল জানেন? ‘ভালো লাগে, দাদা৷’ সারা রাস্তার লোক তখন হাসছে৷ আজ মনে হচ্ছে, সে আমলে ইন্টারনেট থাকলে আমার সেই হর্ন বাজানো ছোকরাই হয়ত স্টার হয়ে যেত৷
মনে আছে, দেশে এককালে লরির পেছনে ‘হর্ন প্লিজ’ লেখা থাকত৷ সেটাও এই ইন্দোনেশীয় ‘ওম তেলোলেৎ ওম’-এর পূর্বসুরি হতে পারত৷ ইন্দোনেশিয়ার শহরে শহরে ছেলেছোকরারা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে চলন্ত বাসগুলোর চালকদের বলছে, ‘চাচা, একবার হর্ন বাজান!’ আর চাচাও একবার ‘তেলোলেৎ’, অর্থাৎ ভেঁপু-ভেঁপু করে তাদের খুশি করে দিচ্ছেন৷
দ্বিতীয় পর্যায়ে ইন্দোনেশিয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপারটা ট্রেন্ড করতে শুরু করে৷ তৃতীয় পর্যায়ে ইন্দোনেশিয়ার ছেলেছোকরারা নামকরা পপ গায়ক আর ডিজে-দের স্প্যাম করতে শুরু করে৷ তাদের মধ্যে এক ওলন্দাজ ডিজে তাঁর একটি গানে ‘তেলোলেৎ’-এর আওয়াজ পর্যন্ত ঢুকিয়ে দেন৷ ‘তেলোলেৎ’ নিয়ে লাখ লাখ টুইট হতে থাকে৷
আর ক'টা দিন অপেক্ষা করলেই যে ‘তেলোলেৎ’ নিয়ে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ গোছের একটা হিট গান বেরিয়ে যাবে, তা ধরেই নেওয়া যেতে পারে৷
এসি/জেডএইচ
প্রিয় পাঠক, কেমন লাগল ভিডিওটি জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে৷