এসএসসি পরীক্ষা: যেসব বিষয় জেনে রাখা জরুরি
৩১ জানুয়ারি ২০১৯১. পরীক্ষা চলাকালে ঢাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্য কাউকে চলাফেরা বা অবস্থান করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)৷
২. পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে৷ যারা দেরিতে যাবে, তাদের নাম, রোল ও দেরির কারণ রেজিস্ট্রারে লিখে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে হবে৷
৩. প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষা কেন্দ্রে সচিব ছাড়া অন্য সবার মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্রে কেন্দ্র সচিবের মোবাইল ফোনটিও ছবি তোলা যায় না এমন হতে হবে৷
৪. প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোর চেষ্টায় গতবারের মতো এবারও পরীক্ষা শুরুর সাত দিন আগ থেকে শেষ পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার৷
৫. এবার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল কাগজে বাঁধিয়ে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে৷
৬. পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে কারো কাছে মোবাইল ফোন পেলে গ্রেপ্তার করা হবে– এমন একটি নির্দেশনাও গতবছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময় দেওয়া হয়েছিল৷
উল্লেখ্য, এবার এসএসসি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৭ জন৷ দাখিলে ৩ লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭১ জন পরীক্ষা দেবে৷ এ বছর সব মিলিয়ে চার হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫১ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে৷
প্রশ্নফাঁস চক্রের ৪৬ জন গ্রেপ্তার
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত দু'টি ‘বড় চক্রের’ হোতাসহ ৪৬ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম৷
ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, গত সপ্তাহে নয় জনকে গ্রেপ্তার করার পর ‘প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস ও ডিজিটাল ডিভাইসের’ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের ওই ৪৬ জনকে ধরা সম্ভব হয়৷ এই চক্র ভেঙে দেওয়ায় আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় আর কেউ প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করার ‘ধৃষ্টতা’ দেখাবে না বলে তারা আশা করছেন তিনি৷
এই চক্রের সদস্যদের মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও আছেন৷ তাদের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়ে যারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি৷ এরকম শতাধিক শিক্ষার্থীর নাম তাদের তদন্তে এসেছে বলেও জানান পুলিশ সুপার৷
গত সপ্তাহে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা হলেন: জনতা ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান, অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহায়মিনুল ইসলাম, তৃতীয় বর্ষের সাঈদুর রহমান ও দ্বিতীয় বর্ষের আব্দুর রহমান রমিজ, গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিমন হোসেন, ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অসীম বিশ্বাস ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোশাররফ হোসেন মুসা এবং ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান তাজুল৷
মোল্লা নজরুল জানান, ‘‘এতদিন প্রশ্ন ফাঁস হতো মূলত প্রেস থেকে৷ তারপর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তা ছড়ানো হতো৷’’
তিনি আরো জানান, সংঘবদ্ধ এই চক্রটি ২০১৫ সাল থেকে ২০১৬ সালে প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে সাভারের একটি বাসায় পরীক্ষার আগের রাতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পড়াতো৷ আরেকটি চক্র ভর্তি ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নের উত্তর কেন্দ্রে কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করত৷
প্রশ্ন ফাঁস করে এ চক্রের অনেকে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন জানিয়ে সিআইড কর্মকর্তা বলেন, ‘‘গ্রেপ্তার ইব্রাহীম, হাফিজ, মোস্তফা, তাজুল ও বাঁধন বিসিএসসহ সকল নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির হোতা৷ প্রাথমিক তদন্তে এই পাঁচজনের নামে ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে৷’’
সিআইডির প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শেখ হিমায়েত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘সবার ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় আমরা প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোসহ সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব৷’’
এপিবি/এসিবি (সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ডেইলি স্টার)