‘টেক্সট মেসেজিং’-এর ২০ বছর
৩ ডিসেম্বর ২০১২বিশ্বব্যাপী লিখিত যোগাযোগের আজ সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম টেক্সট মেসেজিং বা এসএমএস৷ ইন্টারনেটের সংযোগের প্রয়োজন নেই৷ যা লিখতে চান, সেটা টাইপ করে লিখে ‘সেন্ড' বাটন টিপে দিলেই হলো৷
যাত্রা শুরু সেই ৮০-র দশকে৷ আর সোমবার এই ‘টেক্সট মেসেজিং' বা এসএমএস-এর ২০ বছর পূর্ণ হয়েছে৷ জানা গেছে, বিশ্বের তিনভাগের মধ্যে প্রায় দু'ভাগ মানুষের রয়েছে এই এসএমএস করার ক্ষমতা, আছে শর্ট মেসেজ সার্ভিস বা টেক্সট মেসেজিং-এর সুবিধা৷ অর্থাৎ, বিশ্বের প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ বর্তমানে এই এসএমএস সেবা উপভোগ করে থাকেন৷ আর এই বিপুল সংখ্যক মানুষের এহেন একটি প্রযুক্তি ব্যবহারের অন্যতম কারণ: একেবারে কমদামের অথবা নড়বড়ে মোবাইল ফোনেও যে এই এসএমএস-এর সুবিধা রয়েছে৷
শোনা যায়, ১৯৮২ সালে ইউরোপিয়ান টেলিফোনি কনফারেন্সে জিএসএম প্রযুক্তি চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ নিয়োগ করা হয় প্যারিসের কিছু ইঞ্জিনিয়ারকে৷ এর পাঁচ বছর পর ইউরোপের মোট ১৩টি দেশ মোবাইল ফোন যোগাযোগের জন্য জিএসএম প্রযুক্তিকে সাধারণ মোবাইল টেলিফোন সিস্টেম হিসেবে চালু করার একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে৷ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় টেলিফোন সিগনালের মাধ্যমে বার্তা পাঠানোর একটি অভিনব প্রযুক্তি তৈরির৷
প্রথম জিএসএম প্রযুক্তির নেটওয়ার্কে ফোন কলটি করেন ১৯৯১ সালে ফিনল্যান্ডের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী৷ এরপর ১৯৯২ সালে জিএসএম প্রযুক্তির প্রথম মোবাইল ফোনটি বিক্রির জন্য অনুমোদিত হয়৷ ধীরে ধীরে সেটাই গড়ে ওঠে বিশ্বব্যাপী মোবাইল ফোন যোগাযোগের সর্ববৃহৎ নেটওয়ার্ক হিসেবে৷ এই প্রযুক্তির একমাত্র সীমাবদ্ধতা এটাই যে, এটি ১৬০টি অক্ষর বা বর্ণের বেশি ডেটা ধারণ করতে পারে না৷ অবশ্য তাতে এর জনপ্রিয়তা কিছুমাত্র হ্রাস পায় না৷
জার্মানির অন্যতম কম্পিউটার বিষয়ক পত্রিকা ‘সিটি'-র সম্পাদক উর্স মান্সমান-এর কথায়, ‘‘জার্মানির বেশিরভাগ মোবাইল ফোন কোম্পানিই আজকাল এসএমএস-এর জন্য ‘ফ্ল্যাটরেট'-এর ব্যবস্থা করে থাকে৷ অর্থাৎ, টেলিফোনের জন্য একটি নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে দেশের ভিতরে বিনা পয়সায় এসএমএস করা যায়৷ প্রথমদিকটায় এমনটা ছিল না৷''
জার্মানিতেও বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই এসএমএস করার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো৷ গত বছর তো অন্তত ৪ হাজার ৬০০ কোটি এসএমএস করা হয়েছিল শুধু জার্মানিতেই৷ এ দেশে পথে-ঘাটে, বাসে-ট্রামে – সর্বত্রই দেখা যায় মোবাইল ফোন হাতে ছেলে-মেয়েদের৷ তাঁদের বেশিরভাগই বিদ্যুতের গতিতে টাইপ করতে পারেন৷ যে কোনো বার্তা নিমেষের মধ্যে পাঠিয়ে দিতে পারেন অপরকে৷
তবে জার্মানির বিখ্যাত অনলাইন-কোম্পানি ‘টেলটারিফ'-এর কর্মকর্তা রাফায়েলা ম্যোল জানান, ‘‘এই মুহূর্তে অবশ্য এসএমএস-এর বিকল্প প্রযুক্তিও বাজারে এসে গেছে৷ এই যেমন ‘ওয়াটস অ্যাপ' অথবা ‘জয়েন'৷ এই প্রযুক্তিগুলোর মাধ্যমে শুধু দেশের ভিতরে নয়, দেশের বাইরেও বিনা পয়সায় ‘টেক্সট মেসেজ' পাঠানো যায়৷ তাই আরো ২০ বছর পর এসএমএস আদৌ থাকবে কিনা – সেটা হলফ করে বলা যায় না৷''
বলা বাহুল্য, টেলিফোনে কথা বললে অন্যরা শুনতে পায়, ই-মেলের জন্য দরকার হয় কম্পিউটার৷ আর পোস্টে বা ডাকে চিঠি পাঠালে তো কথাই নেই৷ বার্তা পৌঁছাতে পৌঁছাতে লেগে যেতে পারে বেশ কয়েকটা দিন, অনেক সময় সপ্তাহও৷ কিন্তু এসএমএস? এককথায় সস্তা, কার্যকারী এবং তাৎক্ষণিক৷ তাই বহু আন্তর্জাতিক কোম্পানি আজ এই এসএমএস-এর মাধ্যমেই তাদের ‘মার্কেটিং'-এর কাজটা সারে৷ পাঠিয়ে দেয় নির্দিষ্ট কোনো খবর, অনায়াসেই৷ ডয়চে ভেলেও তার ব্যতিক্রম নয়৷ কারণ, অনুষ্ঠান নিয়ে আপনাদের পাঠানো এসএমএস-এর জন্য যে আমরাও অপেক্ষা করে থাকি৷ তাই আর দেরি নয়, জানিয়ে দিন আপনাদের মতামত৷
আমাদের এসএমএস-এর নম্বর:
বাংলাদেশে – ০০৮৮০১৭৩০৩০২২০৫
ভারতে – ০০৯১৯৮৩০৯৯৭২৩২