এশিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ, বিপাকে মহাজনরা
২২ সেপ্টেম্বর ২০১০কিন্তু বিপত্তির কী শেষ আছে৷ বরং এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও এখন চলছে শ্রমিক অসন্তোষ৷ বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ভারতের মতো দেশে শ্রমিকরা চায় আরো বেশি মজুরি৷ নতুবা ভাঙচুর, ধর্মঘট, বিক্ষোভ- কোনটাতেই আপত্তি নেই তাদের৷
কম্বোডিয়ার কথাই ধরুন৷ গ্যাপ, বেনেটন, আডিডাস আর পুমার মতো ব্রান্ডের মহাজনরা খরচ বাঁচাতে বেছে নেন এশিয়ার এই দেশটিকে৷ চলছিল ভালোই৷ কিন্তু দিনকয়েক আগে সেখানে শুরু হয় ব্যাপক শ্রমিক অসন্তোষ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শ্রমিকদের ২০ শতাংশ বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দেয় মালিকরা৷ কিন্তু তাতে যেন আগুনে ঘি পড়লো৷ ২০ শতাংশ নয়, শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, ন্যূনতম বেতন হতে হবে মাসে ৯৩ মার্কিন ডলার৷ শেষমেষ পোশাক আর পাদুকা শ্রমিকদের বেতন ধার্য হয় মাসে ৬১ মার্কিন ডলার৷
কম্বোডিয়ার এই আন্দোলনের বহু আগে থেকেই বাংলাদেশে চলছিল শ্রমিক অসন্তোষ৷ পশ্চিমা পোশাক বোনা প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের আন্দোলন ছিল বেতনসহ সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর৷ কিন্তু শুরুতে পোশাক কারখানার মালিকরা সে দাবি গ্রাহ্য করেনি৷ ফলাফল ভাঙচুর, গাড়ি পোড়ানো আর বিক্ষোভ৷ শেষমেষ সরকার পোশাক শ্রমিকদের বেতন ধার্য্য করে মাসে ন্যূনতম তিন হাজার টাকা৷
তবে এই মজুরিও যথেষ্ট নয় বলে জানান পোশাক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের শহিদুল ইসলাম সবুজ৷ তাঁর দাবি, শ্রমিকদের বেতন হওয়া উচিত ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা৷
অবশ্য শ্রমিক আন্দোলনের মাঝেও বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ এবছর বেড়েছে ২৫ শতাংশ৷ মূলত খরচ বাঁচানোর তাগাদায় থাকা চীন বিমুখ মহাজনরা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে বলেই মত বাজার পর্যবেক্ষকদের৷
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীনের মতো এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে৷ কিন্তু তারপরও তা চীনের কাছাকাছি পৌঁছায়নি৷ কেননা, বর্তমানে যেখানে চীনে শ্রমিক প্রতি ন্যূনতম খরচ ১৬৬ মার্কিন ডলার, সেখানে বাংলাদেশে খরচ মাত্র ৪৩ মার্কিন ডলার৷ তাই, শ্রমিক অসন্তোষে বিপত্তি বাড়লেও মহাজনদের চোখ কিন্তু সরছে না বাংলাদেশের ওপর থেকে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই