1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এমপির মামলার একদিন পরই নিখোঁজ সাংবাদিক

১২ মার্চ ২০২০

ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি গত তিন দিনেও ৷ পুলিশ বলছে তারা চেষ্টা করছেন৷ তবে দ্রুত উদ্ধার চাইলে পুলিশ পরিবারের সদস্যদের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/3ZI7s
Bangladesch Shafiqul Islam Kajol
ছবি: Facebook/Shafiqul Islam Kajol

'পক্ষকাল' নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করা  শফিকুল ও বণিক বার্তায় ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কাজল ফকির নামে একটি একাউন্ট থেকে রাষ্ট্র,সরকার ও সমাজ ব্যবস্থার সমালোচনা করে নানা পোস্ট দিতেন তিনি৷

তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১০ মার্চ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি আর ফিরে আসেননি৷ নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন৷ ওই মামলায় তিন নাম্বার আসামি কাজল৷  

মানবজমিন কারাগারে আটক যুব মহিলালীগ নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে একটি খবর প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয়ে মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি করেন৷ গত ৯ মার্চ কাজল তার ফেসবুকে মানবজমিনের খবরটি শেয়ার করেছিলেন৷ 

পুলিশ বাবাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও তাঁরা গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তা নিতে বলেছেন: মনোরম পলক

কাজলের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার পরিবার বুধবার চক বাজার থানায় একটি জিডি করে৷ জিডিতে বলা হয়, কাজল মঙ্গলবার দুপুরে তার বকশিবাজারের বাসা থেকে মটর সাইকেল যোগে বের হয়ে যান৷ তার সঙ্গে দুইটি মেবাইল ফোন ছিলো৷ এরপর তিনি আর বাসায় ফিরে আসেননি৷ তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে৷ মোটর সাইকেলেরও কোনো খোঁজ নাই৷

কাজলের ছেলে মনোরম পলক জানান, ‘‘তিনি সাধারণত রাত ১০টা-১১টার মধ্যে বাসায় ফেরেন৷ রাতে বাসায় ফিরে না আসায় পরদিন আমরা চকবাজার থানায় জিডি করি৷ পুলিশ আমাদের থানায় ডেকে কথা বলেছে৷ তারা বাবাকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন৷ একই সঙ্গে আমাদের চাইলে গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তা নিতে বলেছেন৷’’

এর বাইরে আর কোনো অগ্রগতি নেই: ওসি

চকবাজার থানার ওসি মওদুদ হাওলাদার বলেন, ‘‘আমরা তার নিখোঁজের বিষয়ে সারাদেশে সংবাদ দিয়েছি৷ তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তথ্য জানার চেষ্টা করছি৷ তার বাসা এবং সন্দেহজনক এলকার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজও সংগ্রহের চেষ্টা করছি৷ এর বাইরে আর কোনো অগ্রগতি নেই৷’’

কাজলকে এমপি'র করা মামলায় আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে শেরেবাংলা থানার ওসি জানে আলম মুন্সি বলেন, ‘‘এই মামলার কোনো আসামিকেই আমরা আটক বা গ্রেপ্তার করিনি৷ আর এখন মামলাটি তদন্ত করছে ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট৷’’

সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘‘মামলাটির তদন্ত ভার তাদের দেয়া হয়েছে৷ তবে কাগজপত্র এখনো হাতে না পাওয়ায় তদন্ত শুরু হয়নি৷ এরমধ্যে তাদের পক্ষ থেকে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তারের প্রশ্নই ওঠেনা৷’’

কাজলের ছেলের প্রশ্ন তাহলে বাবা কোথায়?

‘‘বাবা ফেসবুকে অনেক লেখালেখি করতেন৷ তবে এনিয়ে কখনো কোনো হুমকি পেয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই৷ তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পরও তাকে উদ্বিগ্ন হতে দেখিনি৷ মঙ্গলবার তিনি যখন বাসা থেকে বের হয়ে যান তখনও স্বাভাবিকই ছিলেন৷ আমরা পুলিশের সাথে কথা বলেছি৷ বিভিন্ন পর্যায়ে খোঁজ নিয়েছি৷ তারা জানিয়েছেন এমপির মামলায়ও বাবাকে আটক করা হয়নি৷ তাহলে বাবা কোথায় গেলেন?’’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ফটো সাংবাদিক কাজলকে দ্রুত উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে৷ সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান বলেন, ‘‘কোনো সভ্য সমাজে সাংবাদিক কেন, কোনো নাগরিকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নিন্দনীয়৷ নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের৷ আমরা কাজলকে দ্রুত উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাই৷’’

এবিষয়ে সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, ‘‘আমিও আমার মামলার একজন আসামি নিখোঁজ বলে শুনেছি৷ এটা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দেখার দায়িত্ব৷ আমার মামলায় কোনো আসামি আটক হয়েছে বলে আমার জানা নেই৷ তদন্তকারীরাও কাউকে গ্রেপ্তার করেছে বলে আমার কাছে তথ্য নেই৷

‘‘অন্যায়ভাবে অসত্য তথ্য দিয়ে আমার চরিত্র হননের চেষ্টার অভিযোগে আমি মামলা করেছি৷ এটা আমার প্রতিবাদ৷ কোনো প্রতিশোধ নিতে আমি মামলা করিনি৷’’

এদিকে কাজলের পরিবারের সদস্যরা তার খোঁজ না পেয়ে ভেঙে পড়েছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য