এভারেস্ট জয়ী সৌদি নারী
২৮ মে ২০১৩সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার বিমান থেকে নামলেন রাহা মোহাররক৷ সঙ্গে এভারেস্ট আরোহণের তিন সঙ্গি: কাতারের শাসক পরিবারের সদস্য শেখ মোহাম্মেদ বিন আবদুল্লাহ আল-থানি – তিনিই প্রথম কাতারি, যিনি এভারেস্ট জয় করলেন৷ দ্বিতীয়ত, ফিলিস্তিনের রায়েদ জিদান, যিনি এই এভারেস্ট অভিযানে ফিলিস্তিনি সংগ্রাম, ইসরায়েলি জবরদখলি শক্তির কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের কথা শুনিয়েছেন নানা দেশ থেকে আসা নানা অভিযাত্রীকে৷
রাহার দলে চতুর্থজন ছিলেন ইরানের মাসুদ মোহাম্মদ৷ চারজনেই শারজার অ্যামেরিকান ইউনিভার্সিটির স্নাতক৷ এভারেস্টে উঠেছিলেন নেপালের কচিকাঁচাদের শিক্ষার জন্য অর্থসংগ্রহের উদ্দেশ্যে৷ কাতারের শাসক পরিবারের সদস্য আল-থানি পরে জানান, তাঁরা এই অভিযান থেকে দশ লক্ষ ডলার তুলতে সমর্থ হয়েছেন৷
রাহা মোহাররক প্রথম সৌদি মহিলা হিসেবে এভারেস্টে উঠলেন বটে, কিন্তু সৌদি আরব হলো বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে আজও মহিলাদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ৷ রাহা নিজে এএফপি সংবাদ সংস্থাকে তাঁর সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন মাথা থেকে পা পর্যন্ত আবাইয়া, অর্থাৎ বোর্খায় ঢেকে৷ রাহার বাড়ি জেদ্দায়৷ এভারেস্টে ওঠার আগে ছ'মাস ধরে কঠিন ট্রেনিং নিয়েছেন৷ অপরদিকে তাঁর পর্বতারোণের নেশা অনেক দিনের৷ এ যাবৎ তিনি ইউরোপ, তানজানিয়া, দক্ষিণ মেরু ও আর্জেন্টিনা মিলিয়ে মোট ন'টি শৃঙ্গে আরোহণ করেছেন৷
রাহাকে প্রথমে তাঁর নিজের পরিবারের লোকজনদের রাজি করাতেই বেগ পেতে হয়েছিল৷ সাধারণভাবে সৌদি জনগণের তরফ থেকেও তিনি শুধু সমর্থন নয় ,সমালোচনাও কুড়িয়েছেন৷ কিন্তু এভারেস্ট জয়ের পর দৃশ্যত সে পরিস্থিতি বদলে গেছে৷ রাহার আগমনের জন্য শারজা বিমানবন্দরে যারা অপেক্ষা করছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ইউএই-তে সৌদি দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা আব্দুল মোহসেন আল-হার্থি৷ আল-হার্থি এএফপি-কে বলেন, ‘‘এটা হলো এমন একজন মহিলার বার্তা, যিনি বলতে চান: ‘আমি এ দেশের একজন মেয়ে৷ পুরুষদের মাঝখানে আমি আমার জায়গা করে নিয়েছি৷'''
রাহা মোহাররক স্বয়ং বলেছেন, ‘‘আমি আমার সংস্কৃতি ও ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু করিনি৷ বিরাট কিছু করার জন্য সমাজের বিরুদ্ধে যাবার প্রয়োজন পড়ে না৷''
তবুও, সৌদি মহিলারা একদিন গাড়ি চালাতে পারবেন বলেই রাহার আশা৷ আপাতত ‘‘আরো অনেক বিষয় আছে, যেখানে আমরা বড় কিছু করতে পারি৷''
এসি/এসবি (এএফপি)