সিরিয়ায় মার্কিন বিমান হামলা?
২২ আগস্ট ২০১৪সিরিয়া ও ইরাক জুড়ে নিজস্ব মডেলের কট্টরপন্থি ইসলামি রাষ্ট্র স্থাপন করতে চায় আইসিস৷ ইরাকে সেনাবাহিনী ও কুর্দি পেশমারগা যোদ্ধারা অ্যামেরিকা সহ অন্য রাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে আইসিস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু সিরিয়ায় অরাজকতার সুযোগ নিয়ে ইসলামি জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে৷ সেখানে এক মার্কিন সাংবাদিকের নৃশংস হত্যা এই বাস্তব আরও স্পষ্ট করে তুলেছে৷ আন্তর্জাতিক মহলে একঘরে হয়ে পড়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে সহযোগিতার কোনো সম্ভাবনাও আপাতত দেখা যাচ্ছে না৷ তাই প্রশ্ন উঠছে, শুধু ইরাকের উত্তরাঞ্চলে আইসিস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সীমিত সাফল্য যথেষ্ট কি না৷ তাছাড়া শুধু সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের দমন করা সম্ভব কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে৷
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল বৃহস্পতিবার আইসিস জঙ্গিদের পরবর্তী চাল নিয়ে তাঁর সংশয় প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর মতে, ইরাকে চাপের মুখে পড়ে তারা কৌশলগত পশ্চাদপসারণ করে সিরিয়ায় ফিরে আবার নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারে৷ তারপর ফের ইরাকে ফিরে হামলা শুরু করতে পারে৷
সিরিয়ায় যে সব সরকার-বিরোধী গোষ্ঠী আইসিস-এর আদর্শের ঘোরতর বিরোধী, তারাও হয়ত ইরাকি কুর্দিদের মতো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে পারতো৷ কিন্তু অ্যামেরিকা সহ পশ্চিমা জগতের কোনো সামরিক ও আর্থিক সহায়তা ছাড়া তাদের হাতে এমন ক্ষমতা নেই৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শুরু থেকেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে কোনো পক্ষকে উল্লেখযোগ্য সহায়তা না করার নীতি অনুসরণ করে চলেছেন৷ এমনকি ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর সে দেশের সংকটেও আবার জড়িয়ে পড়তে চান না তিনি৷ আপাতত ইরাকি সরকার ও কুর্দিদের সীমিত ও বিচ্ছিন্ন সহায়তা দিয়ে চলেছে ওয়াশিংটন৷ সেইসঙ্গে ইরাকের পর সিরিয়ার আকাশেও আইসিস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালানোর বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে মার্কিন প্রশাসন৷ খোদ জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ জেনারেল মার্টিন ডেম্পসে এমন হামলার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷
জেনারেল ডেম্পসে সামরিক হামলার পাশাপাশি এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধানসূত্রেরও উল্লেখ করেছেন৷ তাঁর মতে, সিরিয়া ও ইরাকে সুন্নিরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে৷ আইসিস-এর সমর্থনের ভিত্তিই এই সম্প্রদায়৷ ইরাকে নতুন সরকার দেশের সব সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের ফলে অনেক অঞ্চলে শাসনযন্ত্র কার্যত ভেঙে পড়ায় রাজনৈতিক অগ্রগতির সম্ভাবনা এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না৷
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইয়োধোইয়ুনো বলেছেন, আইসিস ইসলাম ধর্মের জন্য অপমানজনক৷ টিউনিশিয়াও আইসিস গোষ্ঠীর বর্বরোচিত অপরাধের তীব্র নিন্দা করেছে৷ আইসিস-এর কার্যকলাপ যে সার্বিকভাবে ইসলাম ধর্মের ভাবমূর্তির ক্ষতি করছে এমন উপলব্ধি বেড়েই চলেছে৷ ফলে বেশ কিছু মুসলিম রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠছেন৷
এসবি/ডিজি (এপি, ডিপিএ, এএফপি)