এফবিআই প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প
১০ মে ২০১৭‘‘আপনি যে আমাকে তিনটি পৃথক উপলক্ষ্যে জানিয়েছেন যে, আমাকে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে না, সেজন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও আমি আইন মন্ত্রণালয়ের এই বিবেচনার সঙ্গে একমত যে, আপনি (এফবিআই-কে) কার্যকরিভাবে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম নন,'' ট্রাম্প মঙ্গলবার কোমি-কে লিখিত পত্রে বলেন৷
দৃশ্যত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেসন্স ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রোজেনস্টাইনের সুপারিশে কোমিকে বরখাস্ত করা হয়েছে৷ হোয়াইট হাউস রোজেনস্টাইনের একটি মেমো প্রকাশ করেছে, যাতে রোজেনস্টাইন লিখেছেন, ‘‘(এফবিআই-এর পরিচালক) যেভাবে সেক্রেটারি ক্লিন্টনের ই-মেল সংক্রান্ত তদন্ত সমাপ্ত করেছেন, তা আমি সমর্থন করতে পারি না; এছাড়া তিনি যে কেন তাঁর ভুল সম্পর্কে প্রায় সার্বজনীন ঐকমত্য মেনে নিতে চাইছেন না, তা আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়৷''
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৩ সালে কোমিকে ১০ বছরের জন্য এফবিআই-প্রধান পদে মনোনীত করেন৷ কোমি'র আগে আর মাত্র একবার এক মার্কিন প্রেসিডেন্ট একজন এফবিআই-প্রধানকে বরখাস্ত করেছেন৷ ১৯৯৩ সালে বিল ক্লিন্টন উইলিয়াম সেসন্সকে নীতিমালা লঙ্ঘণের দায়ে বরখাস্ত করেন৷
কোমির ‘ভুল'
গত সপ্তাহে কোমি কংগ্রেসে তাঁর শপথ নিয়ে প্রদত্ত বিবৃতিতে বলেন যে, হিলারি ক্লিন্টনের উচ্চপদস্থ সহকারী হুমা আবেদিন ‘লক্ষ লক্ষ ই-মেল'' আবেদিনের স্বামীর ল্যাপটপে পাঠিয়েছেন, যার মধ্যে বেশ কিছু গোপনীয় তথ্যও ছিল৷
মঙ্গলবার সকালে সেনেটের জুডিসিয়ারি কমিটিকে পাঠানো দু'পাতার চিঠিতে এফবিআই বলে যে, ল্যাপটপে যেসব ই-মেল পাওয়া গেছে, তার সামান্য একটি অংশ ফরোয়ার্ড করা হয়েছিল – অধিকাংশই ছিল ইলেকট্রনিক পদ্ধতির ‘ব্যাক-আপ'৷
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ১১ দিন আগে কোমি ক্লিন্টনের ই-মেল সংক্রান্ত তদন্ত নতুন করে শুরু করার কথা ঘোষণা করেন৷ তখন তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনে ট্রাম্পকে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছিল ডেমোক্র্যাটদের তরফ থেকে৷
প্রতিক্রিয়া
মঙ্গলবারেও হিলারি ক্লিন্টন নির্বাচনে তাঁর পরাজয়ের একটি কারণ হিসেবে কোমি'র কার্যকলাপের কথা বলেছেন৷ অপরদিকে ট্রাম্পের ভাষ্যে কোমি ক্লিন্টনের নানা অপকীর্তি ধামাচাপা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন৷ বাকি ওয়াশিংটনের নজর দৃশ্যত রাশিয়া-ট্রাম্প তদন্তের দিকে৷
অরেগনের সেনেটর ও সেনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির সদস্য রন ওয়াইডেন কোমি'র প্রতি রাশিয়া-ট্রাম্প তদন্তের পরিস্থিতি খুলে বলার আহ্বান জানিয়েছেন৷
নিউ মেক্সিকোর সেনেটর মার্টিন হাইনরিশ টুইটারে লিখেছেন, কোমির বরখাস্ত ‘‘প্রেসিডেন্ট নিক্সনের ‘স্যাটার্ডে নাইট ম্যাসাকার'-এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়''৷ অপর একটি টুইটে লিখেছেন, ‘‘এটা যদি ট্রাম্পের (নির্বাচনি প্রচার) অভিযানে রুশ সংশ্লেষ নিয়ে তদন্ত থামানোর প্রচেষ্টা হয়, তবে তা সফল হবে না''৷
অ্যারিজোনার রিপাবলিকান সেনেটর জন ম্যাককেইন টুইট করেছেন: ‘‘(এফবিআই) পরিচালক কোমির অপসারণ শুধু এটাই আবার প্রমাণ করছে যে, সিলেক্ট কমিটির ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের ব্যাপারটি অনুসন্ধান করে দেখা উচিত৷''
এসি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)