জরিমানার অর্থে জনকল্যাণ
১০ আগস্ট ২০১৪গত প্রায় চার দশক ধরে ফর্মুলা ওয়ানের জগতে আধিপত্য করে চলেছেন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী বার্নি একেলস্টোন৷ দুর্নীতির দায়ে ৮৩ বছর বয়স্ক এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জার্মানির মিউনিখ শহরের আদালতে মামলা চলছিলো৷ জার্মান এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে তিনি ৪৪ মিলিয়ন ডলার ঘুস দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিলো৷ গত মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে একটা রফা হয়৷ একেলস্টোন ১০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা দিয়ে রেহাই পেয়ে যান৷ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়৷ ফলে অপরাধী হিসেবেও নথিভুক্ত হলেন না তিনি৷
এফ-ওয়ানের মতো ক্রীড়ার ক্ষেত্রে বিশাল অঙ্কের লেনদেন ঘটে৷ তার মধ্যে সবটাই যে বৈধ হবে, তা আশা করা কঠিন৷ যাই হোক, অর্থের বিনিময়ে একেলস্টোন এভাবে রেহাই পাওয়ার ফলে জার্মানিতে বিতর্কের ঝড় চলছে৷ সমালোচকরা বলছেন, টাকার জোরে আইন এড়িয়ে যাওয়ার এমন দৃষ্টান্ত বিচার ব্যবস্থার জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে না৷ যার টাকা নেই, তার জেল হবে – যার আছে সে দিব্যি সসম্মানে আদালত ছেড়ে বেরিয়ে যাবে – এমনটা মেনে নেওয়া যায় না৷
এমন এক রফার সপক্ষেও যুক্তির অভাব নেই৷ ফর্মুলা ওয়ান এক বিশাল আন্তর্জাতিক কর্মযজ্ঞ৷ ড্রাইভার থেকে শুরু করে গাড়ি কোম্পানি, এজেন্ট, কর্মকর্তা, বিনিয়োগকারী – সবাই নানা দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন৷ অত্যন্ত জটিল সেই কাঠামো৷ ফলে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তির সহযোগিতা ছাড়া একটি দেশের আদালতের পক্ষে সব ক্ষেত্রে তাঁর নাগাল পাওয়া কঠিন৷ ৮৩ বছর বয়স্ক বার্নি একেলস্টোন বার বার লন্ডন থেকে মিউনিখে এসে আদালতে হাজির হবেন, এমনটা হয়ত সহজ হতো না৷ মামলা শেষ হবার কথা ছিলো আগামী অক্টোবর৷ একেলস্টোন ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান নি৷ বিষয়টি তড়িঘড়ি মিটিয়ে ফেলতে তিনি জরিমানার অঙ্ক মিটিয়ে দিতে রাজি হয়ে যান৷
মিউনিখের আদালত এত বড় অঙ্কের অর্থ নিয়ে কী করবে? মামলার বিচারক পেটার নল স্থির করেছেন, ৯ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার যাবে সরকারি কোষাগারে৷ বাকি ১০ লক্ষ ডলার দান করা হবে জনকল্যাণমূলক কাজে৷ তিনি এক তালিকা থেকে বিশেষ একটি সংস্থাকে বেছেও দিয়েছেন৷ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শিশুদের সহায়তা করে – এমন এক ফাউন্ডেশন সেই অর্থ পাচ্ছে৷ এই অপ্রত্যাশিত অর্থ পেয়ে সংস্থার প্রতিনিধিরা অভিভূত৷ তাঁরা কোনোদিন একই সঙ্গে এত বড় অঙ্কের চাঁদা দেখেন নি৷ সেই অর্থ কীভাবে কাজে লাগানো যায়, এবার তাঁরা তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এসআইডি)