1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একদিনের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ইনিংস ম্যাক্সওয়েলের

৮ নভেম্বর ২০২৩

৪০ বছর আগে যুক্তরাজ্যে ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কপিল দেব। এই বিশ্বকাপে খেললেন ম্যাক্সওয়েল। অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে তুললেন।

https://p.dw.com/p/4YXVV
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ম্যাক্সওয়েল।
একদিনের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ইনিংস খেললেন ম্যাক্সওয়েল।ছবি: Rajanish Kakade/AP/picture alliance

এবার একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনেক ধারণাকে বদলে দিচ্ছে, অনেক মিথ ভেঙে দিচ্ছে, ২২ গজে অনেক মহাকাব্য তৈরি হচ্ছে। যেমন হলো মঙ্গলবার মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। সেই ইতিহাসের একজনই স্থপতি, অস্ট্রেলিয়ার ৩৫ বছর বয়সি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, নিজের দেশকে যিনি সেমিফাইনালে তুললেন।

ক্রিকেট নাকি ১১ জনের খেলা। একটা দলের টপ ও মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলে নাকি ম্যাচ জেতা যায় না। এরকম অনেক আপ্তবাক্য ক্রিকেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে আছে। সেই সব আপ্তবাক্যকে অনায়াসে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে এক মহাকাব্যিক, অতিমানবীয় ব্যাটিং উপহার দিলেন ম্যাক্সওয়েল। পায়ের পেশীর প্রবল ব্যথাকে মনের জোরে অতিক্রম করে ম্যাক্সওয়েল দেখিয়ে দিলেন, ১১ জনের খেলায় একজনই টিমকে জিতিয়ে দিতে পারেন। নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন।

ম্যাক্সওয়েল যখন ক্রিজে এলেন তখন ৪৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। আফগান বোলারদের ভয়ংকর লাগছে। অস্ট্রেলিয়ার সাত উইকেট পড়ে গেল ৯১ রানে। মনে হচ্ছে, হার অনিবার্য, তখনই জ্বলে উঠলেন ম্যাক্সওয়েল। তবে তার আগে ৩৩ রানের মাথায় নুরের বলে লোপ্পা ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। মিস করলেন মুজিব। ম্যাক্সওয়েল মঙ্গলবার অনেক ক্রিকেটীয় ধারণাকে ভেঙে দিলেও একটা বেঁচে গেল। ক্যাচ ফেলা মানে ম্যাচও ফেলে আসা। হয়তো বা সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্নও। হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মুজিব ও আফগানিস্তানের বাকি প্লেয়াররা।

ওয়ার্নারকে আউট করে আফগানিস্তানম প্লেয়ারদের উল্লাস।
ওয়ার্নারকে আউট করে আফগানিস্তানম প্লেয়ারদের উল্লাস। ছবি: FRANCIS MASCARENHAS/REUTERS

এই ক্যাচটা বাদ দিয়ে ম্যাক্সওয়েলের ১২৮ বলে ২০১ রানের ইনিংস এখন ক্রিকেট ইতিহাসে চিরদিনের জন্য থেকে গেল। এই ইনিংসটা মহাকাব্যিক হয়ে গেল, কারণ, শতরান করার আগে ম্যাক্সওয়েলের পেশীতে টান লাগল। দুই বার তিনি মাঠে শুয়ে পড়লেন। বারবার সাপোর্ট স্টাফ তাকে ম্যাসাজ করল, ব্যথা কমানোর ওষুধ খেতে হলো, তারপরেও ব্যথা বাড়তে থাকলো। মনের জোরে ব্যথাকে অতিক্রম করে তিনি আবার ব্যাট হাতে দাঁড়ালেন। একটা সময়ের পর রান নেয়াও প্রায় সম্ভব হলো না। তখন চার ও ছয় মেরে গেলেন।

শেষ ওভারেই তিনটে ছয় ও একটা চার মেরে দলকে জেতালেন, নিজের দুইশ রান পূর্ণ করলেন।

'এজন্যই তো খেলা দেখা'

উইকেটের অন্যদিকে থাকা কামিন্স পরে বলেছেন, ''অবিশ্বাস্য ঘটনা। ক্রিকেটে এরকম ঘটনা আগে কখনো হয়নি। দর্শকরা বলতেই পারেন, এর জন্যই তো তারা খেলা দেখতে আসেন।''

এমনকী শচিন টেন্ডুলকরও টুইট করে বলেছেন, ''একদিনের ক্রিকেটে আমার দেখা সেরা ইনিংস। শেষ ২৫ ওভারেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিলেন ম্যাক্সওয়েল।''

আজমতউল্লাহ অসাধারণ বল করেও আফগানিস্তানকে জেতাতে পারলেন না।
আজমতউল্লাহ অসাধারণ বল করেও আফগানিস্তানকে জেতাতে পারলেন না। ছবি: FRANCIS MASCARENHAS/REUTERS

এ বি ডিভিলিয়ার্স বলেছেন, ''ম্যাক্সওয়েল আমাদের অবাক করে দিয়েছে।'' শোয়েব আখতারের মতে, ''এরকম একটা ইনিংস যে খেলা সম্ভব তা না দেখলে বুঝতে পারতাম না। অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী থাকলাম।''

কী বললেন ম্যাক্সওয়েল

খেলার পর ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, ''আমাদের পরিকল্পনা ছিল, উইকেট হারাব না। খারাপ বল মারব। খুব গরম ছিল। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকার চেষ্টা করছিলাম।''

ম্যাক্সওয়েল বলেন, ''পরে ঠিক করি, শট খেলব। জেতার চেষ্টা করব। ক্যাচ পড়েছে সেটা ঠিক, তবে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পেরেছি। তাই খুব ভালো লাগছে।''

জিএইচ/এসজি