একটি হাতির পদচিহ্নে জীবনধারণ
হাতিরা সত্যিই অদ্ভুত সুন্দর এক প্রাণি৷ না, শুধু তাদের শুঁড়ের কারণে নয়, তাদের পা-ও ভীষণ স্বতন্ত্র৷ হাতিদের রেখে যাওয়া যে পদচিহ্নগুলো যখন জলে ভরে যায়, তখন তাতে অনেক প্রাণি এসে বাস করে৷ চলুন তাদের দেখে নেওয়া যাক...৷
প্রাকৃতিক প্রকৌশলী
হাতি ছাড়া আফ্রিকার কী দশা হতো একবার ভেবে দেখেছেন? পর্যটকদের বিরাট একটা আকর্ষণ যেত উধাও হয়ে৷ আফ্রিকাতে গিয়ে মস্ত কানের হাতিগুলোর আর দেখা মিলতো না৷ তবে বাস্তুসংস্থান এবং পরিবেশ রক্ষাতেও এই বিশাল প্রাণিগুলোর অবদান কিন্তু কম নয়৷
বিশাল পায়ের পাতা
একটা বড় হাতির ওজন কমপক্ষে ৫ মেট্রিকটন৷ তাই এদের পায়ের পাতাও যে বিশালাকার হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক৷ তাই না? তা হাতিরা যখন জঙ্গল বা শুষ্ক এলাকায় হেঁটে বেড়ায়, তখন মাটির ওপর পায়ের গভীর ছাপ রেখে যায় তারা৷ মানে তাদের পায়ের চাপে মাটিতে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়৷
ছোট্ট পুকুর
মাটির ধরনের ওপর নির্ভর করে হাতিদের পায়ের চাপে ঠিক কত বড় ও গভীর গর্ত হবে৷ যত নরম মাটি, তত গভীর গর্ত৷ তবে সাধারণত হাতির পায়ের ছাপ দেড় ফুট পর্যন্ত গভীর হয়৷ আর সেই গর্ত যখন পানিতে ভরে যায়, তখন তা রূপ নেয় একটা ছোট্ট পুকুরের৷ এবং নিমেষেই তা পোকা-মাকড়ের ঘরবসতি হয়ে ওঠে৷
গণনা
সেনকেনব্যার্গ নেচার রিসার্চ সোসাইটি-র গবেষকরা রুয়ান্ডার কিবাল জঙ্গলে হাতির পায়ের ছাপ পরীক্ষা করে দেখেছেন৷ এক একটি পায়ের ছাপে কমপক্ষে ৬১ রকম প্রজাতির পোকা-মাকড়ের সন্ধান পেয়েছেন তারা৷ এদের মধ্যে পানির পোকাও রয়েছে৷
প্রজননের জন্য বিস্তর জায়গা
অনেক পোকা-মাকড় ডিম পাড়ার জন্য এ ধরনের ছোট্ট পুকুরকে বেছে নেয়৷ এর দু’টি উদাহরণ হলো – ফড়িং এবং মশা৷ তাই ডিম পাড়ার মাত্র পাঁচদিনের মধ্যেই এই গর্তগুলোর পানি শূককীটে ভরে যায়৷
আমার এলাকা
পূর্ণ বয়স্ক ফড়িংরা তাদের এই পুকুরটিকে ভীষণ ভালোবাসে৷ শুধু তাই নয়, অন্যরা যাতে সেখানে ভাগ না বসায় সেটা প্রতিরোধ করে তারা৷ এ ধরনের সুন্দর একটা বাড়ি তো রক্ষা করাই উচিত, তাই না?
অন্ধকার দিক
যেসব মশা ঐ পুলে জন্ম নেয়, সেগুলো ঐ এলাকার পাখিসহ অন্যান্য প্রাণিদের খাদ্য৷ অর্থাৎ এক্ষেত্রে বাস্তুসংস্থানেরও একটা গুরুত্ব রয়েছে৷ তবে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গুর মতো রোগ ছড়াতেও তাদের তুলনা নেই!