এক নজরে বাংলাদেশের রেল
ন্যারোগেজ রেলপথ অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে উঠে গেছে, এখন মেট্রোরেল উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকাবাসী৷ বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের আদ্যোপান্ত দেখুন ছবিঘরে৷
ব্রিটিশ আমলে শুরু
বাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে৷ ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর দর্শনা-জগতি রেললাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় রেল যুগের৷
এখন যা আছে
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৭৮টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৬৫৬টি মিটারগেজ ও ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ এবং আট হাজার ৬৮০টি পণ্যবাহী ওয়াগন আছে৷ তবে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় অধিকাংশের অবস্থাই জরাজীর্ন৷
দুই ধরনের পথ
বাংলাদেশে বর্তমানে ‘ব্রডগেজ’ এবং ‘মিটারগেজ’ এই দুই ধরনের রেলপথ চালু রয়েছে৷ দেশের পূর্বাঞ্চলে রয়েছে মিটার ও ব্রডগেজ রেলপথ৷ পূর্বাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ রয়েছে৷ আগে ন্যারোগেজ রেলপথ চালু থাকলেও এখন আর তার ব্যবহার নেই৷
রেলপথ
বাংলাদেশে দুই হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথ আছে৷ তবে অনেকটাই ব্যবহারের উপযোগী নয়৷ দেশের ৪৪ টি জেলার সঙ্গে রেললাইন নেটওয়ার্ক সংযুক্ত৷
বোর্ড
১৯৮২ সালের ২ জুন পর্যন্ত একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য নিয়ে রেলওয়ে বোর্ডের মাধ্যমে রেলপথের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো৷
রেলওয়ে বিভাগ
১৯৮২ সালের ৩ জুন রেলওয়ে বোর্ড বিলুপ্ত করে এর কার্যক্রম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে বিভাগের আওতায় নেয়া হয়৷ তখন থেকে এই বিভাগের সচিব রেলওয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করতেন৷ পরে রেলওয়েকে পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে ভাগ করা হয়৷
মহাপরিচালকের হাতে রেল
১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট রেলপথের দৈনন্দিন কার্যক্রম যোগাোযাগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে মহাপরিচালকের হাতে ন্যস্ত করা হয়৷ তবে নীতি নির্ধারণের জন্য যোগাযোগমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে গঠন করা হয় নয় সদস্যের বাংলাদেশ রেলওয়ে অথরিটি৷
রেলপথ মন্ত্রণালয়
২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে আদেশ জারি করে৷ বর্তমানে সচিবালয় সংলগ্ন রেলভবনে এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে৷
দীর্ঘ রুট
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ৫০৫ কিলোমিটার, এটিই দেশের সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ রেলরুট৷ এই রুটে ‘দ্রুতযান’ ও ‘একতা এক্সপ্রেস’ চলাচল করে৷
ই-টিকেটিং
বাংলাদেশ রেলওয়ে কয়ক বছর আগে ই-টিকেটিং চালু করেছে৷ যাত্রীরা অনলাইনে তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন৷
সেরা পথ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের রেলপথকে সব থেকে সুন্দর রেললাইন হিসেবে অভিহিত করেছে টেলিগ্রাফ৷ শ্রীমঙ্গলের সবুজে ঘেরা পথটুকু আসলেই দৃষ্টিনন্দন৷
জনবল
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫ হাজার ৮৩ জন নিয়মিত কর্মচারী রয়েছে৷ এর বাইরে বিভিন্ন কারিগরি পদে চুক্তিতে কয়েক হাজার মানুষ কাজ করেন৷
মেট্রোরেল
মেট্রেরেল চালুর জন্য কয়েক বছর আগে কাজ শুরু হলেও ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের মতো এই রেল সার্ভিস চালু হতে পারে৷ মেট্রেরেল চালু করতে রেলপথ স্থাপনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে৷
লোকসান
রেলে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বাড়লেও এর সেবার মানে উন্নতি না হওয়ায় লোকসানের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রেলওয়ে৷ ২০১৭ সালের থেকে ২০১৮ সালে রেলের যাত্রী বেড়েছে এক কোটিরও বেশি, কিন্তু ২০১৭ সালে রেলে এক হাজার ২০০ কোটি এবং ২০১৮ সালে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে৷
১০ খাতে দুর্নীতি
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি, যাত্রীবাহী ট্রেন ইজারা দেয়া এবং ট্রেনে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনসহ বাংলাদেশের রেলখাতের ১০টি দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে প্রতিবেদন দিয়েছে৷