এক ঝলকে বর্তমান বাংলাদেশ
৩১ ডিসেম্বর ২০০৮বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলির অন্যতম৷ প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১ হাজার ৪৫ জনের বাস৷ দেশের মোট ১৫ কোটি জনগণের ৪০ শতাংশই রয়েছে দারিদ্র্য সীমার নীচে৷ মোট জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশই মুসলমান৷ বাকি ১০ শতাংশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান৷
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে জন্ম লাভ করে দুটো দেশ ভারত এবং পাকিস্তান৷ তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানই আজকের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ৷ বৈষম্যের প্রতিবাদে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীরর বিরুদ্ধে শুরু থেকেই চলতে থাকে পূর্বাংশের মানুষের আন্দোলন সংগ্রাম৷ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ৷ সক্রিয় সাহায্য করে ভারত৷ বিশ্বের বুকে স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় এদেশের মানুষ৷ ১৯৭২ সালে দেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন শেখ মুজিব৷ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট রক্তক্ষয়ী সেনা অভ্যুত্থানে সপরিবারে নিহত হন বাংলাদেশের স্থপতি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান৷ ১৯৭৫ সালের পরও আরো বেশ কটি সেনা অভ্যুত্থান, প্রতি-অভ্যুত্থান ঘটেছে বাংলাদেশে৷ নিহত হয়েছেন আরো একজন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান৷
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি
বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি৷ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা৷ জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি-র কর্ণধার৷ ১৯৯১ সালের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পালাক্রমে দেশ শাসন করেছে এ দুটো দল৷ বরাবরই প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলেছে দুটো দলের মধ্যে৷ ব্যাপক দুর্নীতি এবং ত্রুটিপূর্ণ শাসনের কারণে বিশৃংখল পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে দেশের শাসনভার গ্রহণ করে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার৷ ঘোষণা করা হয় জরুরি অবস্থা৷ অবশেষে দুবছর পর ২০০৮ এর ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ শিগগিরই নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সরকার৷
জলবায়ু
বিজ্ঞানীদের মতে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ কার্বন ডাই অক্সাইডের নির্গমন কম করলেও জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব ভোগ করছে এ দেশই৷ বিশেষজ্ঞদের আশংকা, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই হয়ত সমুদ্রে তলিয়ে যেতে পারে দেশের নিম্নাঞ্চল৷
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এদেশের মানুষের নিত্য সঙ্গী৷ ঝড়-ঝঞ্ঝা, বন্যা, খরার সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছে তারা৷ ২০০৭ সালে প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় দেশের দক্ষিণাঞ্চল৷ ব্যাপক প্রাণহানির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশটি৷ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার- যা দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উত্পাদনের ৫ শতাংশ৷ চরম এই বিপর্যয় সামলে আবারো উঠে দাঁড়ায় দেশবাসী৷
অর্থনীতি
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ-এর মতে, চীনের পর বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোষাক রপ্তানিকারক দেশ৷ এছাড়া জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের অবস্থান উল্লেখযোগ্য৷ ৯০ লাখ বাংলাদেশী কাজ করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে৷ এর মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে৷ গত বছর এই খাতে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ছিলো রেকর্ড পরিমাণ- ৮বিলিয়ন ডলার৷