ঋতুমতী-বিরোধী ঐতিহ্য জয় করলেন থাই নারী বক্সাররা
২০ মাস পর আবার খুলেছে ব্যাংককের ঐতিহ্যবাহী লুম্পিনি স্টেডিয়াম৷ থাই বক্সিংয়ের ‘ওয়েম্বলি’ লু্ম্পিনিতে হয়েছে নতুন দিনের সূচনা৷ বক্সিং রিংয়ে আর ‘অস্পৃশ্য’ নন নারীরা৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
নতুন রূপে লুম্পিনি
করোনা সংকটের কারণে প্রায় ২০ মাস বন্ধ ছিল লুম্পিনি স্টেডিয়াম৷ ফুটবলে ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম যেমন বিখ্যাত, থাই বক্সিং বা মুয়ে থাই-এর জন্য লুম্পিনি স্টেডিয়ামও ঠিক সেরকম৷ তবে করোনার সময়েও লুম্পিনিতে খুব বড় একটা কাজ হয়েছে৷ এই ২০ মাসে শেষ করা হয়েছে এর পুনর্নিমাণের কাজ৷
জুয়া বন্ধ করার ঘোষণা
থাই বক্সিং আর জুয়া প্রায় সমার্থক৷ থাই বক্সিংয়ের বড় ম্যাচ মানেই বড় অঙ্কের জুয়া৷ কোনো কোনো ম্যাচ থেকে আয়োজকরা কয়েক মিলিয়ন ডলারও আয় করেন৷ তবে লুম্পিনির কর্তৃপক্ষ এবার জুয়া বন্ধ করতে চলেছে৷ থাই সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন এই স্টেডিয়ামে আর জুয়া দেখতে চান না মেজর জেনারেল রোনাউত রুয়াংসোয়াত৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘এই স্টেডিয়াম পুনর্নিমাণ করা হয়েছে ৷ এখন থেকে এখানে জুয়া নিষিদ্ধ৷’’
নারীর জন্য উন্মুক্ত
থাই বক্সিংয়ে এক সময় নারী পুরোপুরি নিষিদ্ধ ছিল৷ মনে করা হতো ঋতুমতী নারী স্পর্শ করলে বক্সিং রিংয়ের পবিত্রতা নষ্ট হবে৷ ধীরে ধীরে এই কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসছে থাইল্যান্ডের মানুষ৷ দেশের বেশির ভাগ বক্সিং রিংয়েই নারীদের প্রবেশে আর কোনো বাধা নেই৷ এতদিন নারীর জন্য অবমাননাকর এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছিল লুম্পিনি৷ ২০ মাস পর ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়াম এই শৃঙ্খলও ভেঙেছে৷ লুম্পিনি এখন নারীর জন্যও উন্মুক্ত৷
অধিকার অর্জনের আনন্দ
করোনা সংকটের সময় প্রায় বেকার হয়ে ঘরে বসেছিলেন কুল্লানাত ওরনোক৷ ২১ বছর বয়সি এই নারী কিক বক্সার এখন বক্সিং রিংয়ে ফিরেছেন৷ লুম্পিনি স্টেডিয়ামের রিংয়ে গিয়ে পেয়েছেন স্বপ্ন পূরণের আনন্দ৷ এমন সুযোগ পেয়ে কুল্লানাত খুব খুশি, ‘‘এখানে প্রথম নারী হিসেবে লড়াই করার সুযোগ পেয়ে আমরা খুব গর্বিত৷ এই সমান অধিকারের জন্য আমরা অনেক বছর ধরেই লড়ছি৷’’
জুয়া থাকবে?
স্টেডিয়ামের মালিক থাই সেনাবাহিনী লুম্পিনি স্টেডিয়ামে জুয়া নিষিদ্ধের ঘোষণা দিলেও অনেকে মনে হরেন, জুয়াহীন থাই বক্সিং অকল্পনীয়৷ মুয়ে থাই বিশ্বচ্যাম্পিনশিপের অন্যতম আয়োজক সিরিসোমপান-এর জেড সিরিসোমপান মনে করেন, ‘‘লোকজন জুয়া খেলবে, কারণ, মুয়ে থাই-এর ডিএনএ-তে ঢুকে পড়েছে জুয়া৷’’