1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উদ্বাস্তু কোটা বৈধ, বলল আদালত

৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির জন্য উদ্বাস্তু নেয়ার বাধ্যতামূলক কোটা নির্দেশ করার নীতি বৈধ বলে ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস (ইসিজে) রায় দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2jQKw
ছবি: picture-alliance/dpa/MTI/Z. Szigetvary

স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি এই কোটা চ্যালেঞ্জ করেছিল৷ বুধবার ইসিজে সেই চ্যালেঞ্জ প্রত্যাখ্যান করে৷ পূর্ব ইউরোপের ইইউ দেশ আর পশ্চিমের সদস্যদেশগুলির মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক মনোমালিন্য চলেছে৷

ইউরোপীয় আদালতের মতে, জাতীয় সরকারবর্গকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের একটি ন্যায্য অংশ নিতে বলার অধিকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের আছে৷ আদালতের যুক্তি, ‘‘এই প্রক্রিয়া গ্রিস ও ইটালিকে ২০১৫ সালের অভিবাসন সংকটের ধাক্কা সামলাতে সাহায্য করবে এবং (প্রক্রিয়াটি) অনুপাত সম্মত৷’’

আদালতের রায়ের অর্থ এই যে, কোটা প্রণালী অনুসরণ করে চলতে অস্বীকার করলে হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও অপরাপর সদস্যদেশকে জরিমানা দিতে হতে পারে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদেশগুলির একটি বড় অংশ ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই বাধ্যতামূলক কোটা অনুমোদন করে৷ কিন্তু পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র ও হাঙ্গেরি তা প্রত্যাখ্যান করেছিল৷

ইসিজে-তে কোটা পদ্ধতি চ্যালেঞ্জ করার সময় স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির যুক্তি ছিল যে, ইইউ এই কোটা অনুমোদন করার মাধ্যমে তার নিয়মাবলী ভঙ্গ করেছে ও নিজের এক্তিয়ার ছাড়িয়ে গেছে৷

পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির ইসিজে-তে যাওয়া সমর্থন করে – হাঙ্গেরির মতো পোল্যান্ডও কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী নেয়নি৷ স্লোভাকিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্র অল্প কিছু রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী নিয়েছে৷

গ্রিস ও ইটালি থেকে যে ১ লক্ষ ৬০ হাজার উদ্বাস্তু নেওয়ার কথা ছিল৷ এ পর্যন্ত তাদের মধ্যে মাত্র ২৪,০০০ উদ্বাস্তুকে ইইউ-এর ভার বণ্টন নীতি অনুযায়ী অপরাপর দেশে পাঠানো হয়েছে৷ ঐ নীতি অনুযায়ী, হাঙ্গেরির ১,২৯৪ জন উদ্বাস্তু ও স্লোভাকিয়ার ৯০২ জন উদ্বাস্তু নেওয়ার কথা৷ 

অভিবাসন কোটা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে অস্বীকার করার কারণে চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ডের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে ইউরোপীয় কমিশন৷

ইসিজে-র রায় জার্মানি, ফ্রান্স ও ইটালির মতো পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির জন্য জয়ের সমতুল, কেননা তারা অভিবাসন প্রসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ‘সংহতি’ দাবি করে আসছে৷

২০১৪ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে প্রায় ১৭ লাখ অভিবাসী ইইউ-তে এসে পৌঁছেছেন৷ ২০১৬ সাল থেকে অভিবাসী আগমনের হার কমে এসেছে, বিশেষ করে তথাকথিত বলকান রুটটি মোটামুটি বন্ধ হয়ে যাবার পরে৷ তুরস্কের সঙ্গে ইইউ-র একটি অভিবাসন চুক্তির ফলে তুরস্ক থেকে উদ্বাস্তুদের নৌকাযোগে গ্রিসে আগমনও প্রায় বন্ধ হয়ে এসেছে৷ ইত্যবসরে ইইউ লিবিয়া থেকে উদ্বাস্তুদের নৌকাযোগে ইউরোপে আসা কমানোর চেষ্টা করছে৷

প্রতিক্রিয়া

ইউরোপীয় কমিশন ইসিজে-র রায়কে স্বাগত জানিয়েছে৷ ইইউ-এর অভিবাসন কমিশনার দিমিত্রিস আভ্রামোপুলোস বলেছেন, ‘‘পুনর্বাসন পরিকল্পনা যে বৈধ, ইসিজে তা নিশ্চিত করেছে৷ (এখন) একত্রে কাজ করার ও সংহতি পুরোপুরি কার্যকরি করার সময়৷’’

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘আমি চিরকালই আমাদের পূর্ব ইউরোপীয় সহযোগীদের বলেছি যে, দ্বিধা থাকলে বৈধতার প্রশ্নটা পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত৷ কিন্তু এখন আমরা আশা করতে পারি যে, সব ইউরোপীয় সহযোগী এই রায় মেনে চলবে ও অনতিবিলম্বে সমঝোতাগুলি বাস্তবায়িত করবে৷’’

স্লোভাকিয়া বলছে, তারা সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নেবে, কিন্তু তবুও তারা উদ্বাস্তু পরিকল্পনার বিরোধী৷ প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো বলেছেন, ‘‘কোটার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান বদলায়নি৷ অন্যান্য দেশের অভিবাসীরা, যারা এখানে থাকতে চান না, তাদের জোর করে এখানে পাঠানোর চেয়ে আমরা অন্য পন্থায় (ইউরোপীয়) সংহতি প্রকাশের কাজ চালিয়ে যাব৷’’

বুদাপেস্টে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেটার শিয়ার্তো ইসিজে-র রায়কে ‘নির্লজ্জ ও দায়িত্বহীন’ বলে অভিহিত করেছেন৷ ‘‘এই সিদ্ধান্ত গোটা ইউরোপের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ বিপন্ন করছে,’’ বলে শিয়ার্তো মন্তব্য করেন এবং যোগ করেন যে, আদালতের এই সিদ্ধান্ত মূলত রাজনৈতিক৷ ‘‘রাজনীতি ইউরোপীয় আইন ও মূল্যবোধকে ধর্ষণ করেছে,’’ শিয়ার্তো বলেন৷

এসি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)