উত্সবে স্বস্তি নেই
১৫ অক্টোবর ২০১৩সোমবার দুর্গাপূজা শেষে বিজয়া দশমীর দিনে ঢাকার পূজা মন্ডপগুলিতে সব ধর্মের মানুষের ঢল নামলেও তাঁদের সবার মুখেই ছিল একটি কথা, কী হবে দেশের, কি হবে ২৫শে অক্টোবর৷ তাই পুরোহিতও প্রার্থনা করেছেন দেশের শান্তি, সংহতি এবং রাজনৈতিক সুস্থতার জন্য৷
এদিকে কোরবানির ঈদে ঢাকার মানুষ গ্রামে ছুটতে শুরু করেছেন৷ বুধবার বাংলাদেশে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা৷ তবে যাঁরা প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন আর যাঁরা ঢাকায় থাকছেন – তাঁরা কেউই স্বস্তি পাচ্ছেন না৷ সবার মাথায় একটাই চিন্তা – কী হবে ২৫শে অক্টোবর? দেশ ও দেশের মানুষ কোন পরিস্থতির মুখোমুখি হবেন?
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২৫শে অক্টোবর হবে ‘ফাইনাল খেলা'৷ ফাইনাল খেলার জনসভায় সাত দিনের প্রস্তুতি নিয়ে নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ ওদিকে, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, ২৫শে অক্টোবরের জনসভায় হামলা হতে পারে৷ তাই সবাইকে প্রয়োজনে দা-কুড়াল নিয়ে প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে, বলেছেন তিনি৷
অন্যদিকে, একই দিনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ঢাকায় জনসভা ডেকেছে৷ প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে ঘোষণা করেছেন যে, কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের৷ সরকার সে দায়িত্ব পালন করবে৷ প্রসঙ্গত, এদিন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবেন বলে এর আগে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাফর উল্লাহ৷
এ পরিস্থিতিকে আশঙ্কাজনক বলে চিহ্নিত করেছেন সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারে উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, এখন পরস্পরকে দেখে নেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে৷ সেই সঙ্গে যৌক্তিক আলোচনার আশা শেষ হয়ে যাচ্ছে, যা দেশকে সংঘাতের দিকেই নিয়ে যাবে৷ তিনি বলেন, সাংবিধানিক ব্যখ্যা যাই থাকুক না কেন, সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে হবে সরকারকে৷ কিন্তু সেই নিশ্চয়তা এখনও সরকার দিতে পারছে না৷ অথচ দেশকে সংঘাতের হাত থেকে বাঁচানোর প্রথম দায়িত্ব সরকারের৷
প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেন, সংবিধানের এত ব্যাখ্যার মারপ্যাঁচের দরকার নেই৷ দরকার হলো নির্বাচন৷ আর সেই নির্বাচন একতরফা হলে হবে না৷ তাঁর কথায়, এখন দুই নেত্রী বসে যদি এর সমাধান না করেন, তাহলে হয়ত সংঘাত আর ঠেকানো যাবে না৷