উত্তর গাজায় জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চান ব্লিংকেন
১০ জানুয়ারি ২০২৪তেল আভিভে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন। তার আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। ব্লিংকেন জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর বক্তব্য, উত্তর গাজায় ইসরায়েলের সেনার অভিযান সমাপ্তির পথে। সেখান থেকে সেনা জওয়ানদের ধীরে ধীরে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে ব্লিংকেন বলেছেন, উত্তর গাজায় যাতে গৃহহীন মানুষ ফিরে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এবং সে কারণেই দ্রুত সেখানে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দলের যাওয়া দরকার। তারা গিয়ে পরিস্থিতির মূল্যায়ন করতে পারবে। তাদের দেয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে গৃহহীনদের ফের উত্তর গাজায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
ব্লিংকেন জানিয়েছেন, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযান ধীরে ধীরে কমাতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে স্থানীয় মানুষের মানবিক সাহায্যের দিকে। তার কথায়, ''আরো ওষুধ, আরো জল, আরো খাবার, আরো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য গাজায় পাঠাতে হবে।'' মানবিক সাহায্য গাজায় ঠিক মতো ঢোকার পর তা সকলের মধ্যে সমানভাবে বন্টন হচ্ছে কি না, তা নজরে রাখতে হবে। এই মুহূর্তে গাজার সাহায্য প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ব্লিংকেন।
ফিলিস্তিনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক প্রয়োজন
নেতানিয়াহুকে ব্লিংকেনের পরামর্শ, ফিলিস্তিনের নরমপন্থি নেতাদের সঙ্গে ইসরায়েলের বৈঠকে বসা প্রয়োজন। কীভাবে একটি সমাধানসূত্রে পৌঁছানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। আবার একইসঙ্গে ফিলিস্তিনের নেতাদের প্রতি ব্লিংকেনের বার্তা, তাদেরও ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনার সময় নরম হতে হবে। নিজেদের কঠোর অবস্থান ধরে রাখলে হবে না। তবে ফিলিস্তিনের অধিকার আছে নিজেদের পরিচালনা করার। ইসরায়েল সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ব্লিংকেন।
২০০৭ সালে গাজা স্ট্রিপের ক্ষমতা দখল করেছিল হামাস। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফিলিস্তিনের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে হামাস ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিল। সাম্প্রতিক অভিযানের সময় ইসরায়েল বলেছিল, তারা সেনার সাহায্যে গাজা স্ট্রিপের ক্ষমতা নিজেদের হাতে নেবে। কিন্তু অ্যামেরিকা চাইছে, নরমপন্থি ফিলিস্তিনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তা গাজার পরিচালনার ক্ষমতা ফিলিস্তিনের কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে। কিন্তু পুরোটাই হতে হবে আলোচনার সাপেক্ষে।
গাজায় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেশি
তেল আভিভে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ব্লিংকেন জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের ফলে প্রতিদিন অসংখ্য বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। লক্ষ্যণীয়, এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ শিশু আছে। অবিলম্বে এই সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। একইসঙ্গে গৃহহীন মানুষকে ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। ঘরহারা মানুষদের গাজাতেই ফের বসতি গড়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কোনোভাবেই তাদের গাজার বাইরে স্থানান্তরিত করা হবে না বলে এদিন আশ্বাস দিয়েছেন ব্লিংকেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতে সাউথ আফ্রিকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনেছে। ব্লিংকেন এদিন বলেছেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)