মেসির মতো ফুটবলার তৈরির চেষ্টা
১৯ নভেম্বর ২০১৬উত্তর কোরিয়ার এমন ভাবনা অনেকের কাছে স্বপ্ন মনে হতে পারে, কেননা বিশ্ব ফুটবলে ব়্যাংকিংয়ে তাদের অবস্থান এখন ১২৬ তম৷ আগে-পিছে আছে আর্মেনিয়া এবং ইথিওপিয়া৷ তবে এ ধরনের প্রচারণা যে ফুটবলারদের মধ্যে উদ্দীপনা বাড়িয়ে দেয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ আর ২০১৩ সালে পিয়ংইয়ং ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল স্কুল চালু হওয়ার পর থেকে কোচ রি ইউ-ইল ফুটবলারদের আশাকে আকাশচুম্বী করে তুলেছেন৷ কোচ বলছেন, ‘‘মেসির মতো দক্ষ খেলোয়ার তৈরি করার জন্য আমরা খেলোয়াড়দের সেভাবেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছি৷''
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে আমরা এশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছি এবং নিকট ভবিষ্যতে আমরা সবাইকে পেছনে ফেলবো৷'' ফুটবলে উত্তর কোরিয়ার স্বর্ণযুগ বলা হয় ১৯৬৬ বিশ্বকাপের সময়টাকে৷ সেবার ইটালিকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল উত্তর কোরিয়া৷ আর ম্যাচ জেতানো সেই গোলটি করেছিলেন কোচ রি'এর বাবা রি চাং-মুং৷ ৪৪ বছর পর ২০১০ সালের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেলেও একটা ম্যাচও জিততে পারেনি দলটি৷
বর্তমানে দেশটির ফুটবল অ্যাকাডেমিতে ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের বয়স ৯ থেকে ১৫ বছর এবং তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশই নারী ফুটবলার৷ তাদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, যা সব অ্যাকাডেমিতেই সচরাচর চোখে পড়ে৷ কিন্তু কিছু প্রশিক্ষণ আছে, যা অন্য কোথাও দেখা যায় না৷ আর যখন খেলাধুলা থাকে না, তখন শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়, উত্তর কোরিয়ার প্রয়াত নেতাদের জীবনী দেখতে, যাতে তারা নেতাদের জীবন থেকে শিক্ষা নিতে পারে৷
উত্তর কোরিয়ায় পুরুষদের জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জন অ্যান্ডারসন সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘‘খুব শিগগিরই এখান থেকে তারকা ফুটবলার হয়ত বের হবে না, তবে এশিয়ার দলগুলোর মধ্যে সেরা ফুটবলার এদের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসবে৷'' তিনি আরো জানালেন, বেশ কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে অ্যাকাডেমিতে৷ কিন্তু সমস্যা হলো, তাদের কেউ বাইরে খেলতে যায় না, দেশের মধ্যেই খেলে৷ সেই ফুটবলাররা ইউরোপিয়ান ফুটবলের মতো বড় আসরে খেলতে পারলে তাদের জন্য ভালো হতো বলে মনে করেন তিনি, কেননা, বড় আসরে খেললে নিজেদের দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা হয়, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেললে তাদের খেলার ধরন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, উৎসাহ বাড়ে এবং অনেক কিছু শেখা যায়৷
এদিকে, সম্প্রতি ফিফা জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার ফুটবল খাতে উন্নয়নের জন্য দেশটিকে যে ১৭ লাখ মার্কিন ডলার দেয়ার কথা ছিল, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে৷ এর আগে পর্যন্ত পিয়ংইয়ং অ্যাকাডেমি ফিফার কাছ থেকে বড় রকমের অনুদান পেয়ে আসছিল৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
মেসির মতো কোনো ফুটবলার তৈরি করা কি আদৌ সম্ভব? লিখুন নীচের ঘরে৷